নবান্ন। — ফাইল চিত্র।
আগামী বছরের বাজেট অধিবেশনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল নবান্ন। সেই মর্মে সব দফতরের কাছে নির্দেশ গিয়েছে। আগামী ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইনে সব দফতরকে তাদের প্রস্তাব জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অর্থ দফতর থেকে। প্রশাসন সূত্রে খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই অনলাইনে অর্থ দফতরের আইএফএমএস পোর্টালে দফতরগুলিকে যাবতীয় প্রস্তাব নথিভুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের কারণে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট প্রস্তাব এবং ২০২৪-২৫ সালের নতুন বাজেট পৃথক ভাবে পেশ করতে হবে। এই কারণে বাজেট অধিবেশনের পাঁচ মাস বাকি থাকতেই সেই প্রস্তুতি শুরু করে দেওয়া হয়েছে। নবান্ন সূত্রে খবর, আগামী বছর মার্চ মাস থেকে দেশের লোকসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হবে, চলবে মে মাস পর্যন্ত। নবান্ন চাইছে, নতুন বছরের ফেব্রুয়ারি মাসেই বাজেট অধিবেশনের আয়োজন করতে। তাই এ বার অনেক আগে থেকেই প্রস্তুতির কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে।
তবে রাজ্য প্রশাসনের আরও একটি অংশের মতে, আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাস জুড়ে পশ্চিমবঙ্গে উৎসবের মরসুম। সেই মরসুমে বেশির ভাগ সময়েই সচিবালয় এবং দফতরগুলি ছুটির কারণে বন্ধ থাকবে। তাই বাজেট অধিবেশনের প্রস্তুতির জন্য খুব কম সময় হাতে পাওয়া যাবে। সে কথা মাথায় রেখেই দফতরগুলিকে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিজেদের প্রস্তাব জমা দিতে বলা হয়েছে। তার পর অর্থ দফতর সেই প্রস্তাব পর্যালোচনা করার পর, তা পেশ করা হবে ২০২৪-২৫ সালের বাজেট অধিবেশনে। রাজনৈতিক ভাবে আগামী বছর সব রাজনৈতিক দলের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আগামী বছর লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, ক্ষমতাসীন দলগুলি চাইবে বাজেটে জনমুখী প্রকল্পের ঘোষণা করে ভোট বাক্সে শান দিতে। এক দিকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার যেমন জনমুখী প্রকল্পের মাধ্যমে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরতে চাইবে। তেমনি আবার অবিজেপি শাসিত রাজ্য এবং বিরোধীদের জোট ‘ইন্ডিয়া’য় থাকা দলগুলি নিজেদের দখলে থাকা রাজ্যগুলিতে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করার কৌশল নেবে। সে কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার আগামী বছরের বাজেট অধিবেশন সাজাতে চাইছে।
অর্থ দফতর থেকে এমন নির্দেশ পাওয়ার পরেই তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে সব দফতরে। মন্ত্রী এবং দফতরের প্রধান সচিবেরা নির্দেশ দিয়েছেন দ্রুততার সঙ্গে প্রস্তাব তৈরি করতে। নবান্নের একাংশ মনে করছে, ২৬ তারিখের অনেক আগেই দফতরগুলির প্রস্তাব জমা পড়ে যাবে। কারণ রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাতে থাকলেও, দফতরের পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতেই। সে ক্ষেত্রে স্পেন সফর থেকে ফিরে বাজেট অধিবেশন সংক্রান্ত প্রস্তুতি নিয়ে খোঁজ খবর নিতে পারেন তিনি। তাই তিনি দেশে ফেরার আগেই সব দফতরের মন্ত্রী এবং আধিকারিকেরা তাঁদের প্রস্তাব জমা দিতে চাইবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।