ছবি: সংগৃহীত।
এত দিন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী অনুমোদন করলেই চলত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বা মুখ্যসচিবের ছাড়পত্র না-নিয়ে আর কোনও দফতরই লোকসভা ও বিধানসভায় প্রশ্নের জবাব দিতে পারবে না। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি সব দফতরকেই এই নির্দেশ দিয়েছে নবান্নের শীর্ষ মহল।
লোকসভা ও বিধানসভায় সাংসদ-বিধায়কেরা দফতর-ভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। রীতি অনুযায়ী সেই প্রশ্ন লিখিত ভাবে আগে থেকে লোকসভা বা বিধানসভার সচিবালয়ে জমা দিতে হয়। তার পরে সংশ্লিষ্ট দফতরে সেই প্রশ্ন পাঠায় লোকসভা-বিধানসভার সচিবালয়। জমা পড়া প্রশ্ন অনুযায়ী উত্তর প্রস্তুত করেন মন্ত্রীরা। তার ভিত্তিতে অধিবেশনে প্রশ্নের উত্তর দেন তাঁরা। লোকসভায় আবার কোনও রাজ্যের কোনও বিষয়ে প্রশ্ন উঠলে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের কাছে তার জবাব চায় লোকসভার সচিবালয়।
লোকসভা বা বিধানসভার জন্য প্রস্তুত করা উত্তর সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী অনুমোদন করলেই এত দিন তা সচিবালয়ে ফেরত যেত। নতুন পদ্ধতিতে লোকসভা বা বিধানসভার জন্য আসা প্রশ্নের উত্তর প্রস্তুত করবে সংশ্লিষ্ট দফতর। তার পরে তা পাঠানো হবে মুখ্যসচিবের কাছে। বিষয়গত ভাবে মুখ্যসচিব সেই উত্তর খতিয়ে দেখবেন। তেমন কোনও নীতিগত প্রশ্নের উত্তর হলে তা পাঠাতে হবে মুখ্যমন্ত্রী দফতরে। মুখ্যমন্ত্রীর দফতর তাতে ছাড়পত্র দিলে সেই উত্তর লোকসভা বা বিধানসভায় যাবে।
আরও পড়ুন: দেশছাড়া করার হুমকি, বাবুলের নয়া কীর্তি
প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার ব্যাখ্যা, এ-সব ক্ষেত্রে সামগ্রিক ভাবে সরকারের তরফে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়। ফলে উত্তর নিয়ে সচেতন থাকা বিশেষ জরুরি। নীতিগত এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে তার উত্তর সরকারের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হয়। প্রধানত সেই জন্যই দফতরগুলিকে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রথমে উত্তর দেখবেন মুখ্যসচিব। তেমন তেমন বিষয় হলে মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ নেবেন তিনি।
লোকসভা বা বিধানসভায় জমা পড়া প্রশ্নের উত্তর সংশ্লিষ্ট সচিবালয়ে ফেরত পাঠাতে যাতে কোনও ভাবেই দেরি না-হয়, সেই ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে দফতরগুলিকে। প্রশ্ন হাতে পাওয়া মাত্র তার উত্তর তৈরির জন্য দফতরগুলির সঙ্গে সমন্বয় করতে কয়েক জন আধিকারিককে দায়িত্ব দিয়েছে রাজ্য সরকার। ওই কর্তা বলেন, ‘‘যথাসময়ে প্রশ্ন পাঠানো সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। কোনও কারণে দেরিতে উত্তর গেলে তা নিয়ে অযথা সমালোচনা হতে পারে। ধাক্কা খেতে পারে প্রশাসনের ভাবমূর্তি। সেই জন্য দফতরগুলিকে দ্রুত উত্তর পাঠাতে বলা হয়েছে।’’
আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে সরকারের এই সিদ্ধান্ত রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, বিশেষত লোকসভা থেকে এখন এমন সব বিষয়ে প্রশ্ন আসছে, যা রাজ্য সরকারের নীতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ফলে সেই সব প্রশ্নের উত্তর তৈরিতে কোনও দফতর এবং প্রশাসনের শীর্ষ মহলের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব থাকলে তার প্রভাব সুদূরপ্রসারী হতে পারে। প্রধানত সেই জন্য বাড়তি সতর্ক থাকতে হচ্ছে রাজ্যকে।