প্রতীকী ছবি।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার পদে একক নামের প্রস্তাব মানতে চায়নি রাজভবন। এই পরিস্থিতিতে জটিলতা দীর্ঘায়িত না করে নতুন আর একটি নামের প্রস্তাব করল নবান্ন। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যসচিব রাজীব সিংহের সঙ্গে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব অজিতরঞ্জন বর্ধনের নাম প্রস্তাব করে ফের ফাইলটি পাঠানো হয়েছে রাজভবনে।
গত ১৮ মে রাজীবকে পরবর্তী রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বেছে নিয়েছিল নবান্ন। ওই দিনই ফাইলটি রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয় সরকারের তরফে। কিন্তু তাতে অনুমোদন দেননি রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বরং ওই পদে শুধুমাত্র এক জনের নাম কেন প্রস্তাব করেছে সরকার, সেই প্রশ্ন তুলে ফাইলটি নবান্নে ফেরত পাঠায় রাজভবন। শুক্রবার সেই তালিকায় অজিতের নাম অন্তর্ভুক্ত করে তা ফের পাঠানো হয় রাজভবনে।
প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই প্রশ্নে রাজভবনের এক্তিয়ার অনেকটাই সীমিত। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসাবে কাকে বেছে নেওয়া হবে, তা পুরোপুরি রাজ্য সরকারের উপরে নির্ভরশীল। সাংবিধানিক ভাবে রাজ্যের সেই প্রস্তাবে ছাড়পত্র দিতে হয় রাজ্যপালকে। অতীতে এমন বিষয়ে রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের টানাপড়েন হয়েছিল কি না, তা অবশ্য মনে করতে পারছেন না প্রবীণ আমলাদের অনেকেই।
পর্যবেক্ষকমহল জানাচ্ছে, ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত ভোটের সময় হয়ে গিয়েছে। ২৮ মে বর্তমান কমিশনার সৌরভ দাস দায়িত্ব থেকে অবসর নিচ্ছেন। ফলে সেই পদে দ্রুত নতুন কাউকে বসানো প্রয়োজন। নতুন কমিশনারকেও পরিস্থিতি বুঝে নিয়ে সব জেলা প্রশাসনগুলিকে ভোটমুখী করে তুলতে হবে। তাতেও কিছুটা সময় দরকার। এই অবস্থায় নতুন কমিশনার নিয়োগে বিলম্ব হলে গোটা প্রক্রিয়া পিছিয়ে যেতে পারে। সেই কারণেই সম্ভবত এই প্রশ্নে রাজভবনের সঙ্গে জটিলতা জিইয়ে রাখতে চাইছে না নবান্ন। রাজভবনের বার্তা পেয়ে তড়িঘড়ি নতুন আর একটি নামের প্রস্তাব করা সেই মনোভাবেরই ইঙ্গিত করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৮৯ ব্যাচের আইএএস অফিসার অজিত রঞ্জন বর্ধন কিছুটা সময় পঞ্চায়েত দফতরের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এখন তিনি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরে অতিরিক্ত মুখ্যসচিব পদে কর্মরত। প্রবীণ আধিকারিকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, সাধারণত অবসরপ্রাপ্ত কোনও অফিসারকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে অতীতে সুশান্ত রঞ্জন উপাধ্যায় কমিশনারের পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ায় তৎকালীন পরিবহণসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে ওই পদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।