গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
উপনির্বাচনে সদ্য জয়ী চার জন তৃণমূল প্রার্থীর শপথগ্রহণ নিয়ে আর কোনও জটিলতা চাইছে না নবান্ন। এ বিষয়ে উদ্যোগী হতে আগামী সপ্তাহে পরিষদীয় দফতর চিঠি পাঠাতে চলেছে রাজভবনে। সেই চিঠিতে তৃণমূলের চার জয়ী প্রার্থীর বিধায়ক হিসাবে শপথগ্রহণের জন্য রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে উদ্যোগী হতে অনুরোধ করা হবে। শনিবার রাজ্যের চারটি বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়। মানিকতলায় সুপ্তি পাণ্ডে, বাগদায় মধুপর্ণা ঠাকুর, রানাঘাট দক্ষিণে মুকুটমণি অধিকারী এবং রায়গঞ্জে কৃষ্ণ কল্যাণী জয়ী হয়েছেন। শাসকদলের লক্ষ্য, যত দ্রুত সম্ভব জয়ী প্রার্থীদের শপথগ্রহণ করিয়ে এলাকার উন্নয়নের কাজে তাঁদের শামিল করা। তাই প্রথমে নির্বাচন কমিশন বিধায়কদের জয়ের বিষয়টি বিধানসভার সচিবালয়কে জানাবে। সেই কাগজপত্র বিধানসভা এবং রাজ্য সরকারের পরিষদীয় দফতরের পক্ষ থেকে পাঠানো হবে রাজভবনে। তার পরই, শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান কবে হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন রাজ্যপাল বোস।
বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ভগবানগোলার বিধায়ক রেয়াত হোসেন সরকারের শপথগ্রহণ দীর্ঘ এক মাস আটকে ছিল রাজভবন বনাম নবান্নের দ্বন্দ্বে। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন নবান্নের অবস্থানের পক্ষেই। কিন্তু এ বার আর জটিলতা চাইছে না কোনও পক্ষই। পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার রাজ্যপালকে এড়িয়ে কোনও কাজ করতে চাইছে না। আমরা নিয়মমাফিক রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে বিধানসভায় এসে বিধায়কদের শপথগ্রহণ করানোর আবেদন জানাব। সঙ্গে জানাব, যদি তিনি কোনও কারণে বিধানসভায় আসতে না পারেন, তা হলে বিধায়কদের শপথগ্রহণের দায়িত্ব যেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেন।’’
গত ৪ জুন লোকসভার সঙ্গে বরাহনগর এবং ভগবানগোলা উপনির্বাচনের ফলাফলে জয়ী হন যথাক্রমে সায়ন্তিকা এবং রেয়াত। তাঁদের শপথগ্রহণ করাতে বিশেষ অধিবেশনের আয়োজন করা হয়। এক মাস পর ৫ জুলাই সেই অধিবেশনে শপথগ্রহণ করেন তাঁরা। এই এক মাস ধরে রাজভবন শপথ নিয়ে নানা টালবাহানা করছিল বলে অভিযোগ সরকার পক্ষের। যদিও , এ ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অধিকারের কথা জানান দিয়ে বিবৃতি দিয়েছিল রাজভবন। শেষে রাজ্যপাল নির্দেশ দিয়েছিলেন, বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় শপথবাক্য পাঠ করাবেন। কিন্তু স্পিকারের উপস্থিতিতে ডেপুটি স্পিকার সেই দায়িত্ব পালনে নিজের অপারগতা প্রকাশ করলে ২ নম্বর অনুচ্ছেদের ৫ নম্বর ধারাকে হাতিয়ার করে বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে জয়ী দুই সদস্যকে শপথবাক্য পাঠ করান স্পিকার। কিন্তু, এ বার আর তেমন কোনও জটিলতা চাইছে না রাজ্য। তাই সোমবার প্রশাসনিক কাজকর্ম শুরু হলেই পরিষদীয় দফতর থেকে চিঠি দিয়ে রাজভবনকে বিধায়কদের শপথগ্রহণের ক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে আবেদন করা হবে বলেই জানানো হয়েছে।