(বাঁ দিকে) নিহত তৃণমূল নেতা বাপি রায়। বাপির দিদি (ডান দিকে)। — নিজস্ব চিত্র।
উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে তৃণমূল নেতা বাপি রায়ের খুনের ঘটনায় সিবিআই তদন্ত দাবি করল পরিবার। নিহত নেতার পরিবারের সদস্যেরা জানিয়েছেন, কী কারণে কারা এই হামলা করল, তা তাঁরা জানেন না। তবে দোষীদের ফাঁসি চান। তা নিশ্চিত করতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন সকলেই।
শনিবার বাংলার চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফলঘোষণা হয়েছে। উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রেও উপনির্বাচন হয়েছিল। রায়গঞ্জে ৫০ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়া প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী। তার পরেই রাতে ইসলামপুর শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, জাতীয় সড়কের ধারে একটি হোটেলে খাবার খাচ্ছিলেন বাপি রায় ও মহম্মদ সাজ্জাদ নামে দুই তৃণমূল নেতা। নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। কয়েক জন দলীয় কর্মীও ছিলেন সেখানে। সেই সময় ৯-১০ জনের একটি দল ঘিরে ধরে তাঁদের উপর গুলি চালায়। বাপি ও সাজ্জাদকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাপিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসক। গুরুতর আহত অবস্থায় সাজ্জাদ চিকিৎসাধীন।
বাপির পরিবারে শনিবার রাত থেকে হাহাকার। তাঁর দিদি বলেন, ‘‘ও কাল সাড়ে ৫টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। দলের লোকজনের সঙ্গে কথা বলছিল। হঠাৎ গুলি চলে। যারা এটা করেছে, আমরা তাদের ফাঁসি চাই। সিবিআই তদন্ত চাই। কেন এটা হল, বলতে পারছি না। ওর সঙ্গে কারও কোনও ঝামেলা আছে বলে শুনিনি। বাইরের কথা আমার ভাই ঘরে এসে বলত না।’’
বাপির আর এক দিদি বলেন, ‘‘চোখে, কাঁধে সব জায়গায় গুলি করেছে। রাজনৈতিক কারণেই এই খুন। আমরা ওদের শাস্তি চাই। এত বড় ষড়যন্ত্র কে করল, জানতে হবে। আমরা সিবিআই তদন্ত চাই।’’
বাপির স্ত্রী বলেন, ‘‘গুলিতে গুলিতে ওঁকে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। বিকেলে কেউ ফোন করে ডেকেছিল। শুনেছি দলের অনেকে ছিলেন। বৈঠক হচ্ছিল। হঠাৎ আমাদের কাছে ফোন এল, শুনলাম কারা ওঁকে গুলি করেছে। ছুটে গিয়ে দেখলাম পড়ে আছে। চোখে, কাঁধে, কানে, বুকে গুলি করে ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। সিবিআই তদন্ত চাই।’’
এই ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে। ঘটনার পর থেকে এলাকা থমথমে। ইসলামপুরের এসপি জবি থমাস কে বলেছেন, ‘‘তদন্ত শুরু হয়েছে। যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের গ্রেফতার করা হবে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’