ফাইল চিত্র।
রাজ্যভিত্তিক মূল্যায়ন বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, বেশ কিছু কাজে কয়েকটি জেলা পিছিয়ে থাকছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের ওই বৈঠকের পরে শুক্রবার বিভিন্ন দফতরের আধিকারিক ও জেলাশাসকদের সঙ্গে বৈঠক করে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীও বুঝিয়ে দিয়েছেন, একাধিক প্রকল্পের কাজে যে গতি আশা করা হয়েছিল, বাস্তবে তা থাকছে না। জেলা কর্তাদের একাংশের মতে, নবান্ন যে ‘রুষ্ট’, এ দিনের বৈঠকে তার একটা আভাস মিলেছে।
সূত্রের দাবি, গত বছর জুন মাসে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে প্রশাসনের সর্বোচ্চ মহল বৈঠক করে একটা রূপরেখা স্থির করেছিল। কিন্তু এত দিন পেরিয়ে গেলেও সে কাজে অগ্রগতি তেমন উল্লেখযোগ্য নয়। এর মধ্যে শিল্পমহলের চাহিদা বুঝে কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজগুলিও এখন জেলা প্রশাসনগুলিকেই দেখভাল করতে হচ্ছে। রাজ্যের লক্ষ্য ছিল, ২০২৩ সালের মধ্যে ১০০টি শিল্পতালুক তৈরি করতে হবে। কিন্তু সেই প্রকল্পের বহু কাজ এখনও বাকি রয়ে গিয়েছে। স্কুল পড়ুয়াদের পোশাকের জন্য কাপড় তৈরি এবং স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে তা সেলাই করানোর কাজও তেমন গতি পায়নি। জলস্বপ্ন প্রকল্পে পাইপ পাতার জন্য প্রয়োজনীয় জমি জোগাড়, সামাজিক পেনশন প্রকল্পে এখনও কিছু সমস্যা থেকে গিয়েছে। বৃহস্পতিবারের প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেছিলেন, যে কাজ যখন শেষ হওয়ার কথা, তা করা যাচ্ছে না। পূর্ত দফতর সংক্রান্ত এক একটি কাজ নির্ধারিত সময় পেরিয়ে চলছে দীর্ঘদিন ধরে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, এমন ঘটনা ঘটলে খরচের বহর অনেকটা বেড়ে যায়।
রাজ্যের চলতি আর্থিক পরিস্থিতিতে (খরচ নিয়ন্ত্রণের বিধি যখন কঠোর ভাবে মানতে হচ্ছে) সেই ‘বিলাসিতা’ মানা যে সম্ভব নয়, এ দিন তা স্পষ্ট করে দিয়েছে নবান্ন। ফলে যথাযোগ্য নজরদারি চালিয়ে সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করে বাড়তি খরচ বাঁচানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ বাধাহীন করতে যে ‘সমন্বয় পোর্টাল’ তৈরি করা হয়েছে, তার যথাযথ ব্যবহারের উপরেও জোর দিয়েছে নবান্ন। এতে কোনও কাজে অন্য কোনও দফতরের সহযোগিতা প্রয়োজন থাকলে পোর্টালে তা জানানো যাবে। প্রশাসনিক শীর্ষকর্তারা নিয়মিত নজর রাখার ফলে সেই সহযোগিতা পেতে সময় নষ্ট হবে না।
সীমান্তে থাকা স্থলবন্দরগুলির পার্কিং ব্যবস্থা পরিবহণ দফতরের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই কাজ ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বাধ্যতামূলক ভাবে শেষ করার নির্দেশ জেলাগুলিকে এ দিন দিয়েছে নবান্ন।
সরকারের লক্ষ্য, প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে (যেখানে সম্ভব) একটি করে শিল্পতালুক তৈরি করা। সেই কাজই অনেকটা বাকি।