—ফাইল চিত্র।
অতিমারি পর্ব এখনও কাটেনি। তার মধ্যে ফের মাথাচাড়া দিচ্ছে ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া। এই পরিস্থিতিতে পুরসভাগুলিকে আরও এক মাস বাড়ি-বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করার নির্দেশ দিল পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতর। ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, সপ্তাহে এক বার করে মাসে মোট চার বার সমীক্ষা করতে হবে।
কলকাতা-সহ রাজ্যের ২৫টি পুরসভাকে আলাদা করে এ কাজে বিশেষ জোর দিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের ব্যাখ্যা, ওই ২৫টি পুর এলাকায় ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া এখনও মারাত্মক আকার না নিলেও অন্য এলাকাগুলির তুলনায় প্রকোপ বেশি। সেই কারণেই আলাদা করে ওই ২৫টি পুর এলাকাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের কর্তাদের আরও দাবি, মূলত ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু ম্যালেরিয়াকেও কম গুরুত্ব দেওয়া উচিত নয়।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ডেঙ্গি, সেখানে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। স্বাস্থ্য ভবনের ভেক্টর কন্ট্রোল ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বাড়ি বাড়ি নজরদারির উপর গুরুত্ব দেন।
জানানো হয়েছে, প্রতিটি পুরসভায় ৮-১০ জনের ভেক্টর কন্ট্রোল দল গড়তে হবে। যে সব এলাকায় মশার প্রাদুর্ভাব বেশি, সেখানে টানা নজরদারি চালাতে হবে। ফি শনিবার কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে পুরসভাগুলি। যে সব পুরসভায় জলাশয়ে মশার লার্ভা মারার জন্য নৌকা কম রয়েছে, তাদের নৌকা দেওয়া হবে। দক্ষিণ দমদম পুর এলাকার দশটি ওয়ার্ডকে অতি সংক্রমণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। মুখ্যসচিবের সঙ্গে বৈঠকে ঠিক হয়েছে, অগ্নিনির্বাপণ দফতরের মন্ত্রী সুজিত বসুর নির্দেশ মেনে এই ওয়ার্ডগুলিতে কাজ হবে।
প্রসঙ্গত, বর্ষা পরবর্তী সময়ে জমা জলে মশার বংশবৃদ্ধি হয়। বহু সময়েই দেখা গিয়েছে, বাড়ির আনাচে-কানাচে, ফুলের টবে জমা জলে মশার বংশবৃদ্ধি হচ্ছে। বহু সময়ে বাড়িতে আক্রান্ত রোগী থাকলেও প্রশাসনের নজরে তা আসে না। এই পরিস্থিতিতে বাড়ি-বাড়ি ঘুরে পুরসভার সমীক্ষা করা জরুরি। বহু ক্ষেত্রে সরকারি আবাসন বা সরকারি দফতরেও জল জমিয়ে রেখে মশার আঁতুড়ঘর তৈরি হতে দেখা যায়। প্রশাসনের খবর, পুরসভাগুলিকে সমীক্ষার পাশাপাশি স্বাস্থ্য, ভেক্টর নিয়ন্ত্রণ এবং জঞ্জাল সাফাই দফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে মশার লার্ভা ধ্বংসেও জোর দিতে বলা হয়েছে।
তবে সরকারি আধিকারিকদের অনেকে এও বলছেন, পুরসভার সক্রিয়তার পাশাপাশি জনগণের সচেতনতাও জরুরি। বারবার বলা সত্ত্বেও বাড়ির আশপাশে ফুলের টব, ফাঁকা ভাড়, টায়ার বা বর্জ্য থালা-বাসনে জল জমে থাকছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই এ ধরনের জঞ্জাল সাফাইয়ের ক্ষেত্রে সক্রিয় হচ্ছেন না। ডেঙ্গি এবং ম্যালেরিয়া ঠেকাতে জনসচেতনতাও জরুরি বলে মনে করছেন তাঁরা।