মৃত সুরাইয়া খাতুন। নিজস্ব চিত্র।
নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর রহস্য-মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। ঘটনাটি ঘটেছে বেলডাঙার মক্রামপুর গ্রামে। মৃত কিশোরীর নাম সুরাইয়া খাতুন। চোদ্দ বছরের সুরাইয়া বেলডাঙার হরিমতি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ত।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, রবিবার রাত দেড়টা নাগাদ আচমকা এক চিত্কার ভেসে আসে। সেই আওয়াজ শুনে তাঁরা গিয়ে সুরাইয়াদের বাড়িতে দৌড়ে যান। গিয়ে দেখেন ঘরের মধ্যে সুরাইয়া গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে। পাশে দাঁড়িয়ে সুরাইয়ার মা, বোন এবং ভাই। প্রতিবেশীরা দড়ি কেটে তাকে নীচে নামিয়ে আনেন। সুরাইয়াকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় তার মা তাঞ্জিলা বিবি বাধা দেন বলে অভিযোগ। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, সেই সময় ওই কিশোরীর মা বলেন, ‘‘ঈশ্বরের জিনিস, ঈশ্বর নিয়ে নিয়েছেন। ওকে কোথাও নিয়ে যাওয়ার দরকার নেই।’’ এর পরেই সবার মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। তাঞ্জিলা বিবিকে ধরে শুরু হয় মারধর।
পুলিশ জানিয়েছে, তাঞ্জিলা বিবির স্বামী কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বছরে দু-এক বার বাড়িতে আসেন। মক্রামপুরে দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে নিয়ে থাকেন তিনি। সুরাইয়ার বোন এবং ভাই যদিও জানিয়েছে, দিদি নিজেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তাঞ্জিলা বিবিরও দাবি, এক কিশোরের সঙ্গে সুরাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এ কথা জানতে পেরে তিনি মেয়েকে বকাবকি করেন। এর পরেই নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সে। যদিও এ কথা মানতে নারাজ প্রতিবেশীরা। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, স্বামী কাছে না থাকায় অন্য এক জনের সঙ্গে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তাঞ্জিলা বিবি। মেয়ে সুরাইয়া সে কথা জেনে যাওয়ায়, মা তাকে খুন করে এখন আত্মহত্যার মিথ্যে গল্প বানাচ্ছেন তিনি।
প্রতিবেশীরাই খবর দেন বেলডাঙা থানায়। পুলিশ এসে ক্ষিপ্ত জনতাকে শান্ত করে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঞ্জিলা বিবিকে আটক করা হয়েছে। আত্মহত্যা না খুন, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার আগে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পুলিশ। তবে, প্রাথমিক ভাবে মৃতের গলায় ফাঁসের দাগ দেখা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: নাতির বয়ানে বৌমার নামে খুনের অভিযোগ শাশুড়ির