আমার পুলিশই দেশের সেরা, দাবি মমতার

যত দিন যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে অপরাধের ধরন। আর তাতেই রোজ রোজ পুলিশের কাজ আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে। তার মধ্যেও কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ যে-ভাবে কাজ করে চলেছে, তাতে তাদের প্রশংসা প্রাপ্য বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই না-থেমে মমতার দাবি, তাঁর পুলিশই দেশের সেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অগস্ট ২০১৬ ০৩:৪১
Share:

যত দিন যাচ্ছে, বদলে যাচ্ছে অপরাধের ধরন। আর তাতেই রোজ রোজ পুলিশের কাজ আরও বেশি কঠিন হয়ে পড়ছে। তার মধ্যেও কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ যে-ভাবে কাজ করে চলেছে, তাতে তাদের প্রশংসা প্রাপ্য বলে মনে করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখানেই না-থেমে মমতার দাবি, তাঁর পুলিশই দেশের সেরা।

Advertisement

প্রথাগত অপরাধ এখন কমে গিয়েছে। তার পরিবর্তে নতুন নতুন অপরাধপ্রবণতা দেখা যাচ্ছে। সাইবার ক্রাইম যার অন্যতম। তাই পুলিশের সামনে এখন আরও বেশি চ্যালেঞ্জ, শুক্রবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বাড়তি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পুলিশ কাজ করে যাওয়া সত্ত্বেও যাঁরা তাদের খুঁত খুঁজতে ব্যস্ত, তাদের কটাক্ষ করেন মমতা। কলকাতা পুলিশের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ‘জয় হে’-তে তিনি বলেন, ‘‘এর পরেও পুলিশকর্মীরা ৩৬৫ দিন রোদ-জল-ঝড়ে কাজ করে চলেছেন। যদি সামান্য দু’-একটা ঘটনা ঘটে, সেটাকেই অনেকে বড় করে দেখায়!’’

এই মনোভাব বদল করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মন্তব্য, যত ছোট ঘটনাই হোক না কেন, তা ঘটাই উচিত নয়। কিন্তু দেখতে হবে, তেমন কিছু ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না। ‘‘তার বদলে যদি পুলিশের বদনাম শুরু হয়ে যায়, সেটা অবিচার,’’ বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

পার্ক স্ট্রিট বা কাটোয়ার ধর্ষণ কাণ্ড, কালিয়াচক বা ইলামবাজারের গোলমেলে পরিস্থিতি নিয়ে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশকে বারবার সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রী সেই সব ঘটনার জন্য তাঁর সমালোচকদের বার্তা দিয়েছেন এ দিন। সারা বছর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা থেকে মেলা-খেলা পরিচালনা, ট্রাফিক সামলানো থেকে উৎসবের সময়ে শান্তি বজার রাখা, অপরাধ দমন থেকে নাশকতা ঠেকানোর যে-সব কাজ পুলিশকে করতে হয়, তার কথাও মনে রাখা দরকার। সমালোচকেরাও যাতে তা মাথায় রাখেন, কটাক্ষের সঙ্গেই সেটা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

পুলিশের কাজ কতটা কঠিন হয়ে গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী সেটাও ব্যাখ্যা করেন নিজস্ব ভঙ্গিতে। তিনি বলেন, ‘‘এখন তো একটা টুইট থেকে দাঙ্গা হয়ে যায়। আগে পুলিশকে এমন পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়নি।’’ নতুন ধরনের এই সব চ্যালেঞ্জ সামলে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ যে-ভাবে কাজ করে চলেছে, তা দেশের সেরা বলে দরাজ সার্টিফিকেট দেন মুখ্যমন্ত্রী।

এ দিনের অনুষ্ঠানে পুলিশকর্মীদের পরিবারের সদস্যেরাও উপস্থিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদেরও বাহবা দেন। তিনি জানান, পুলিশকর্মীদের পরিবার পাশে আছে বলেই তাঁরা এত ভাল কাজ করতে পারেন।

প্রশংসার অভিমুখ মমতার দিকে ঘুরিয়ে দেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণাতেই ‘জয় হে’-র মতো অনুষ্ঠান করা সম্ভব হচ্ছে। এবং মুখ্যমন্ত্রীর উৎসাহকে পাথেয় করেই কলকাতা পুলিশ এমন নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছে।’’

নগরপালের সুরে সুর মিলিয়েই পুলিশ পরিচালনায় মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। তিনি জানান, দার্জিলিঙের সোনাদায় রাষ্ট্রপতির কনভয়ের যে-গাড়িটি খাদে পড়ে গিয়েছিল, তাতে থাকা পুলিশকর্তারা তো প্রায় মরেই গিয়েছিলেন। মাইকে মুখ্যমন্ত্রীর গলা শুনে তাঁরা ধড়ে প্রাণ ফিরে পান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement