জিয়াগঞ্জের একই পরিবারে তিন জন খুনের ঘটনা জেলা তো বটেই, সারা রাজ্যেও আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশ, সিআইডি গত কয়েক দিন ধরে হন্যে হয়ে ঘুরেছে। মাস কয়েক আগে জিয়াগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছি। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগী দেখছিলাম। এমন সময় একটি পুলিশ ভ্যান আসে। এক পুলিশ অফিসার এসে আমাকে বলেন, ‘‘ডাক্তারবাবু, জিয়াগঞ্জের খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। আপনাকে একটু গাড়ির কাছে যেতে হবে।’’ বাইরে বেরিয়ে দেখি শ’খানেক লোক গাড়ি ঘিরে উৎসুক চোখে তাকিয়ে আছে। গাড়ির ভিতরে দু’জন পুলিশ ধরে বসে আছে বছর কুড়ির এক যুবককে।
নামটা ততক্ষণে দেখে নিয়েছি, উৎপল বেহেরা ওরফে মনোজ বেহেরা। চিকিৎসকের কর্তব্য মতো যেটুকু জানতেই হয়, সেটুকুই জানতে চাইলাম। উৎপলকে বেশ শান্ত এবং নির্লিপ্ত দেখাচ্ছিল। তার চোখের ভাষায় ছিল দৃঢ়তা। নাম জিজ্ঞেস করে মিলিয়ে নিলাম। সে তার নিজের সঠিক নামটাই বলল। কোনও শারীরিক অসুবিধা হচ্ছে কিনা জানতে চাওয়ায় বেশ বিরক্ত হয়ে জানাল, তার কোনও অসুবিধা নেই। তার পরে চোখ সরিয়ে নিল। পুলিশের কাছেই জানলাম, এই প্রথম ধৃত যুবককে কারও সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হল।
ছেলেটিকে এক ঝলক দেখে কে বলবে, এই ছেলেটিই শিশু ও অন্তসত্ত্বা-সহ তিন জনকে খুন করেছে বলে অভিযোগ। এ সব ভাবতে ভাবতেই ফের কাজে ফিরলাম।
চিকিৎসক, জিয়াগঞ্জ
গ্রামীণ হাসপাতাল