সপরিবারে বন্ধুপ্রকাশ।
কখনও মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ, কখনও সিআইডি। গত ক’দিনে বারবার জেরার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁদের। শুনতে হয়েছে একই প্রশ্ন। সে-সব প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে তাঁরা এখন ক্লান্ত—স্পষ্ট বলে দিচ্ছেন জিয়াগঞ্জে নিহত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা। তাঁদের পাল্টা প্রশ্ন, বিজয়া দশমীর দিন খুন হয়ে গিয়েছে বন্ধুপ্রকাশের পরিবার। এমন ঘটনা ঘটাল কে বা কারা, তা এখনও জানা গেল না কেন?
যে দিন খুন হন জিয়াগঞ্জের শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর স্ত্রী বিউটি ও ছেলে অঙ্গন, সে দিন থেকেই বিউটির গয়নার কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না বলেও দাবি করেছেন বিউটির বাপের বাড়ির লোকজন। রামপুরহাট থানার সিউড়া গ্রামে বিউটির বাপের বাড়িতে সোমবার আসে সিআইডি-র চার সদস্যের দল। তদন্তকারীরা বিউটির মা চন্দনা মণ্ডল, দাদা সাক্ষীগোপাল এবং দাদু বাদল মণ্ডলকে জিঞ্জাসাবাদ করেন। তদন্তকারী অফিসার বি এন সাহা অবশ্য জানিয়েছেন, তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা যাবে না।
তবে বন্ধুপ্রকাশের শ্যালক সাক্ষীগোপাল এ দিন বলেন, ‘‘বোনের বিয়ের সময় আমাদের পরিবার থেকে ওকে বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না দেওয়া হয়েছিল। ভাগ্নেকেও পরে কিছু গয়না দেওয়া হয়েছিল। তা ছাড়া, বন্ধুপ্রকাশ নিজেও গয়না কিনেছিল। কিন্তু, সিআইডি অফিসারেরা এ দিন আমাদের জানিয়েছেন, বোনের বাড়িতে থাকা গয়নার কোনও হদিস তাঁরা পাননি। এতে আমরা আরও হতাশ হয়ে পড়েছি। এত টাকার গয়না কোথায় গেল, কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’’ তিনি আরও জানান, তাঁর বোনের সঙ্গে সৌভিকের পরিচয় কত দিনের, বন্ধুপ্রকাশের সঙ্গে সৌভিকের ব্যবসায়িক ও আর্থিক লেনদেন সম্বন্ধেও সিআইডি জানতে চেয়েছে। সেই সঙ্গে সৌভিকের সঙ্গে বন্ধুপ্রকাশ সিউড়ার বাড়িতে কত দিন যাতায়াত করেছে, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
কিন্তু, ঘটনার এত দিন পরেও রহস্যের জাল উদ্ঘাটন করতে রাজ্য পুলিশ এবং সিআইডি ব্যর্থ বলে দাবি করেছেন বন্ধুপ্রকাশের শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে আমরা হতাশ।’’ ঘটনার সিবিআই বা উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেছেন তাঁরা।
এ দিন ঘণ্টা দুয়েক সিউড়া গ্রামে থাকার পরে সন্ধ্যায় সিআইডি-র তদন্তকারী দল যায় রামপুরহাটে রামরামপুরে, বন্ধুপ্রকাশের বাবা অমর পালের বাড়িতেও। অমরবাবু এবং বন্ধুপ্রকাশের সৎ মা মনোরমা পালকে জিঙ্গাসাবাদ করা হয়। পরিবারের সদস্যরা জানান, সিআইডি দল কুড়ি মিনিটের বেশি ছিল না। যা কিছু তদন্তকারীরা জানতে চেয়েছেন, সে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে সংবাদমাধ্যমকে কিছু জানাতে চায়নি পাল পরিবার।