বুধবারের খারাপ ফল নিয়ে বিজেপি-র বরখাস্ত নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারও সরব হয়েছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবিয়া, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী থেকে রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার-সহ রাজ্যে নেতৃত্বের সকলকেই আক্রমণ করেন এবং তাঁদের দূরদর্শীতার অভাবেই এমন ফল বলে উল্লেখ করেন।
লকেটের নাম না করে জবাব দিলেন সুকান্ত। ফাইল চিত্র
১০৮ পুরভোটের গণনার শেষে বিজেপি-র ঝুলিতে শূন্য। একটি পুরসভারও দখল পায়নি গেরুয়া শিবির। রাজ্যে ২২৭৪ ওয়ার্ডের মধ্যে বিজেপি জিতেছে মাত্র ৬৩ টিতে। দলের বাইরে এমন ফল নিয়ে কটাক্ষের মুখে তো পড়তেই হচ্ছে, সমালোচনার সুর অন্দরেও। ফলে ঘোষণা যখন শেষের মুখে তখনই দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় টুইটে শুধু ‘আত্মসমীক্ষা’ শব্দটি লেখেন। যার মধ্য দিয়ে দলকেই তিনি আক্রমণ করেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। বিজেপি শিবিরও তেমনটাই মনে করছে।
তবে জবাবও দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। লকেটের নাম উল্লেখ করেননি। সুকান্ত সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘আত্মবিশ্লেষণ সব সময়ই করতে হয়। বিজেপি নিয়মিত করে। এ বারেও করবে। কিন্তু শুধু দল নয়, সকলেই সেই আত্মবিশ্লেষণে অংশ নিতে হবে। এর জন্য সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’’
উত্তরাখণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনের সহ-পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বাইরে লকেট। বাজেট অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লি গেলেও বাংলায় আসেননি। পুরভোটের প্রচারেও অংশ নেননি। এ নিয়ে দলের অন্দরে লকেটকে নিয়ে অনেক ক্ষোভ ছিল ভোটের আগে থেকেই। বুধবার লকেট টুইট করার পরে সুকান্তর মুখে যেন সেই ক্ষোভই প্রকাশ পেল। প্রসঙ্গত গোটা রাজ্যের মতো লকেটের লোকসভা এলাকা হুগলির কোনও পুরসভাতেই ভাল ফল হয়নি বিজেপি-র। তবে কি লকেট বা অন্যান্য নেতা, বিধায়ক, সাংসদরা কে কতটা কাজ করেছেন তার বিশ্লেষণও হবে? এর উত্তরে সুকান্ত বলেন, ‘‘সবকিছুরই বিশ্লেষণ হবে। কে কেমন কাজ করলেন সেটাও তো খতিয়ে দেখা দরকার।’’
বুধবারের খারাপ ফল নিয়ে বিজেপি-র বরখাস্ত নেতা জয়প্রকাশ মজুমদারও সরব হয়েছেন। তিনি কেন্দ্রীয় সহ-পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয়, রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তী থেকে সুকান্ত সকলকেই আক্রমণ করেন এবং তাঁদের দূরদর্শিতার অভাবেই এমন ফল বলে উল্লেখ করেন। জয়প্রকাশ বলেন, ‘‘ফোর্থ ডিভিশন খেলার দল নিয়ে মেসির দলের সঙ্গে লড়াই করলে যা ফল হয় তাই হয়েছে। কোচেদের ভূমিকাও তাই প্রশ্নের মুখে।’’ এই প্রসঙ্গে অবশ্য কোনও জবাব দিতে রাজি হননি সুকান্ত। প্রসঙ্গত জয়প্রকাশদের মতো প্রকাশ্যে পদ্মের বর্তমান রাজ্য কমিটির বিরুদ্ধে সরব না হলেও তিনি যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে রয়েছেন এমন ইঙ্গিত আগেই দিয়েছেন লকেট। কিছুদিন আগেই উত্তরাখণ্ডে থাকার সময়ে বিদ্রোহী সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেন লকেট। এর পরে দিল্লিতে বরখাস্ত বিজেপি নেতা রীতেশ তিওয়ারির সঙ্গেও বৈঠক হয় তাঁর। এ বার রাজ্য সাধারণ সম্পাদক হয়েও প্রকাশ্যে টুইট করার পরে লকেটের অবস্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি হল রাজ্য বিজেপি-তে।