মুকুল রায় এবং কৃষ্ণ কল্যাণী। ফাইল চিত্র।
খাতায়-কলমে মুকুল রায় ছিলেন বিরোধী দলের প্রতিনিধি। সেই পরিচয় দেখিয়েই তাঁকে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান করা হয়েছিল। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে যাওয়ায় বিধায়ক-পদ খারিজের আবেদন যাঁর বিরুদ্ধে করা হয়েছে, তাঁকে পিএসি-র চেয়ারম্যান কেন করা হল, সেই প্রশ্নে আদালতে গিয়েছিল বিজেপি। সূত্রের খবর, মুকুলের ইস্তফার পরে পিএসি-র শীর্ষ পদে দেখা যেতে পার আর এক ‘দলবদলু’ বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীকে। শেষ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হলে শাসক ও বিরোধী দলের সংঘাত ফের অনিবার্য!
অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পিএসি-র চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন মুকুল। তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার জানিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে পিএসি-র সদস্যও আর থাকছেন না কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ক। স্পিকার জানিয়েছেন, মুকুলের জায়গায় কমিটিতে নতুন সদস্য নেওয়া হবে এবং পরবর্তী চেয়ারম্যান বাছা হবে। সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণকে পিএসি-র সদস্য করে তাঁকেই নতুন চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। বিজেপির প্রতীকে রায়গঞ্জ থেকে বিধানসভা ভোটে জিতলেও পরে তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় মুকুলের মতো তাঁর বিধায়ক-পদও দলত্যাগ-বিরোধী আইনে খারিজ করার জন্য বিজেপির তরফে আবেদন জমা রয়েছে স্পিকারের কাছে। এ বার মুকুলের মতো ‘দলবদলু’ আর এক জনকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা হলে তারা তা মানবে না বলেই ইঙ্গিত মিলছে বিজেপি পরিষদীয় দল সূত্রে।
তৃণমূলের পরিষদীয় দলের এক নেতার কথায়, ‘‘বিরোধী দলের কোনও সদস্যকে পিএসি-র চেয়ারম্যান করাই রেওয়াজ। সেই অনুযায়ীই স্পিকার নিশ্চয়ই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ বিধায়ক কৃষ্ণ এ দিনই রায়গঞ্জ থেকে কলকাতা রওনা হয়েছেন। পিএসি নিয়ে এই মুহূর্তে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে স্পিকার ঘোষণা করবেন।’’
নতুন চেয়ারম্যান কে হবেন, তা নিয়ে স্পিকার বিমানবাবুও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘এখনও এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। আগে পিএসি-র সদস্য নিতে হবে, তার পরে চেয়ারম্যান করব।’’ সেই সঙ্গেই স্পিকার বলেন, ‘‘মুকুল রায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছি। জানতে চেয়েছি, ওঁকে কেউ ভয় দেখিয়েছে বা প্রভাব বিস্তার করেছে কি না। উনি জানিয়েছেন, স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছেন স্বাস্থ্যের কারণে। তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছি। কমিটিতে যে শূন্য পদ হল, আইনত তা পূরণ করব।’’