Mukul Roy meets Bidhannagar Mayor Sabyasachi Dutta

মমতার বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা আগেই সব্যসাচীর বাড়িতে মুকুল, কথা হল অনাস্থা মোকাবিলার কৌশল নিয়ে

সব্যসাচীকে নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই তাঁর আগমণ কি শুধুই ব্যক্তিগত কারণে? কোনও রাজনৈতিক বিষয়ে কথা হয়নি? মুকুল স্পষ্ট জানান যে রাজনৈতিক কথাও হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৯ ১৫:৪০
Share:

বিজেপি নেতা মুকুল রায়। —ফাইল চিত্র।

আবার সব্যসাচী দত্তর বাড়িতে হাজির হলেন মুকুল রায়। বৈঠক করলেন একান্তে। বৈঠক সেরে বেরনোর সময় স্পষ্ট জানালেন, বিধাননগর পুর নিগমে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে যে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। তৃণমূল বিধায়কদের নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক শুরু হওয়ার মাত্র ঘণ্টাখানেক আগে সব্যসাচীর বাড়িতে মুকুল রায়ের এই পদার্পণ স্বাভাবিক ভাবেই জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে। তৃণমূলের তরফে এখনও এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ সল্টলেকের ডিএল ব্লকে সব্যসাচী দত্তর বাসভবনে পৌঁছন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়। বিধাননগরের মেয়র তথা রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়কের বাড়িতে মুকুল আধঘণ্টা খানেক ছিলেন। বেরনোর সময়ে সংবাদমাধ্যমকে মুকুল রায় জানান, সব্যসাচী দত্তর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক শুধু রাজনৈতিক নয়, ব্যক্তিগতও। তাই সব্যসাচীর বাড়িতে তাঁর যাওয়া-আসায় অস্বাভাবিক কিছু নেই।

কিন্তু সব্যসাচীকে নিয়ে রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা যখন তুঙ্গে, ঠিক তখনই তাঁর আগমণ কি শুধুই ব্যক্তিগত কারণে? কোনও রাজনৈতিক বিষয়ে কথা হয়নি? মুকুল স্পষ্ট জানান যে রাজনৈতিক কথাও হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সব্যসাচীর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনা হয়েছে, ১৮ জুলাই ভোটাভুটি হবে। সে বিষয়েই মূলত কথা হয়েছে। কী ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা হবে, তার কৌশল নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’’

Advertisement

সব্যসাচীর বাড়িতে মুকুল রায়

মুকুল রায়ের এই মন্তব্য রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সব্যসাচী দত্তর বিরুদ্ধে বিধাননগর পুর নিগমে অনাস্থা আনা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু সব্যসাচীকে তৃণমূল এখনও সাসপেন্ড বা বহিষ্কার করেনি, সব্যসাচী নিজেও দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেননি। অর্থাৎ সব্যসাচীর বিরুদ্ধে জমা পড়া অনাস্থা প্রস্তাব খাতায়-কলমে এখনও তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়ই। সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে সব্যসাচীর বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছেন বিজেপি নেতা মুকুল— এই ছবি ইঙ্গিতবহ।

দলের সব বিধায়ককে এ দিন তৃণমূল ভবনে বৈঠকে ডেকেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মূলত ২১ জুলাই নিয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। ৩টে নাগাদ বৈঠক শুরু হওয়ার কথা ছিল। তৃণমূল বিধায়ক হিসেবে সব্যসাচী দত্তেরও সে বৈঠকে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে এ দিন মুকুল রায় হাজির হন সব্যসাচীর বাড়িতে। তখনই প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় যে, মমতার ডাকা বৈঠকে এ দিন সব্যসাচী দত্ত যাবেন না।

আরও পড়ুন: বৈঠকে সব্যসাচী, সৌজন্যের আবহে জল মাপল দু’পক্ষ

মুকুল রায়ের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে সব্যসাচীর সাক্ষাৎ নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব বরাবরই উষ্মা প্রকাশ করেছেন। কিন্তু সব্যসাচী বার বারই বলতেন, মুকুল রায় তাঁর বাড়িতে আসেন দাদা হিসেবে এবং তিনি সৌজন্যের খাতিরে স্বাগত জানান। তৃণমূলের তরফে অবশ্য সব্যসাচীকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল যে, সৌজন্যের দোহাই দিয়েও আর মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করা যাবে না। কিন্তু সব্যসাচী সে কথাও শোনেননি। গত রবিবার রাতে সল্টলেকের একটি ক্লাবে ফের তিনি মুকুলের সঙ্গে দেখা করেন এবং একসঙ্গে নৈশভোজ সারেন। তাতে বেজায় অসন্তুষ্ট হন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সব্যসাচীর বিরুদ্ধে বিধাননগর পুরসভায় অনাস্থা আনার নির্দেশ দিয়ে দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার বিধাননগরের মেয়র বুঝিয়ে দিলেন, দল যে পদক্ষেপই করুক, তিনি নিজের অবস্থানে অনড়। মুকুল রায়ের সঙ্গে এ দিন ফের তিনি বৈঠক করলেন নিজের বাড়িতে। এবং বৈঠক শেষে সব্যসাচী নিজে মুখ না খুললেও মুকুল তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জানিয়ে গেলেন, অনাস্থার বিষয়েই আলোচনা হয়েছে।

আরও পড়ুন: অবিলম্বে ৩৪ হাজার পদে নিয়োগ একই সঙ্গে, ঘোষণা মমতার

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement