গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
দলত্যাগ অভিযোগের শুনানিতে এলেন না মুকুল রায়। শুনানির বৈঠকে তাঁর না আসার কারণ জানিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন তৃণমূলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। আর সেই চিঠিকেই নিজেদের অভিযোগের স্বপক্ষে ‘বড় হাতিয়ার’ বললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বৃহস্পতিবার স্পিকারের কাছে মুকুলের দলত্যাগ-বিরোধী মামলার শুনানি ছিল। দুপুর একটা নাগাদ স্পিকারের ঘরে পৌঁছন বিরোধী দলনেতা-সহ কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায় ও তাঁদের আইনজীবীরা। সেখানে আধঘণ্টা শুনানি চলে। শুনানি পর্বেই শুভেন্দু জানতে পারেন মুকুলের অবস্থানের কথা। মুকুলের অনুপস্থিতিতে আগামী শুনানির দিন হিসেবে ১২ নভেম্বর ধার্য করেন স্পিকার।
স্পিকারের উদ্দেশ্যে লেখা তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মুকুল অসুস্থতার কারণেই শুনানিতে যোগ দিতে পারছেন না। বর্তমানে অসুস্থতার কারণে চিকিৎসাধীন তিনি। তাই ২৩ তারিখের বৈঠকে তাঁর উপস্থিতি সম্ভব হচ্ছে না। কৃষ্ণনগর উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুলের হয়ে তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের চিঠিকে তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদনের ক্ষেত্রে বড় হাতিয়ার বলে মনে করছে বিজেপি পরিষদীয় দল। শুভেন্দু বলেছেন, ‘‘মুকুলবাবু যে তৃণমূল পরিষদীয় দলের সদস্য হয়েছেন, তার প্রমাণ আজ দিয়ে দিয়েছেন। তাঁর উত্তরের বদলে স্পিকারকে চিঠি পাঠিয়েছেন সরকারি দলের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। তিনি জানিয়েছেন অসুস্থতার কারণে মুকুল রায় শুনানিতে আসছেন না।’’ এ ক্ষেত্রে মূলত তিনটি বিষয়কে হাতিয়ার করতে চাইছেন বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেছেন, ‘‘প্রথমত, নির্মল ঘোষ এই চিঠিটি দিয়েছেন। তাই স্পষ্ট যে মুকুল রায় এখন তৃণমূল পরিষদীয় দলের সদস্য। ফলে দলত্যাগ-বিরোধী আইন এখনই কার্যকর করা দরকার। দ্বিতীয়ত, মুকুল নিজে আসতে না পারলেও চিঠি দিয়ে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করতে পারতেন। তৃতীয়ত, তৃণমূলের মুখ্য সচেতকের চিঠির সঙ্গে মুকুলের স্বাস্থ্য সম্পর্কে কোনও নথি দেওয়া হয়নি।’’
তবে বিজেপি যে স্পিকারের সিদ্ধান্তের জন্য খুব বেশি অপেক্ষা করবে না, তাও জানিয়ে দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা। মণিপুর বিধানসভার একটি দলত্যাগ-বিরোধী মামলায় আদালতের রায়ে বলা হয়েছিল, তিন মাসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিধানসভার স্পিকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিজেপি প্রত্যেক দলত্যাগী বিধায়কের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চায়। স্পিকার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত না নিলে আদালতের দ্বারস্থ হবে গেরুয়া শিবির। শুভেন্দু জানিয়েছেন, আগামী সোমবার তাঁরা মুকুলের দলত্যাগের বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। আরও দুই দলত্যাগী বিধায়ক বিষ্ণুপুরের তন্ময় ঘোষ ও বাগদার বিশ্বজিৎ দাসের বিধায়ক পদ খারিজের জন্য ইতিমধ্যে স্পিকারের কাছে আবেদন করেছেন বিরোধী দলনেতা। সে ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করবে বিজেপি। ফল না পেলে সে ক্ষেত্রেও আদালতে যাবেন তাঁরা। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার স্পিকারের কাছে চতুর্থ শুনানি ছিল।