মোট ছ’টি বিষয় ছিল ৬০০ নম্বরের এই পরীক্ষায়। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের জেলা স্তরের হাসপাতাল শুরু করে থেকে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিকে ছ’টি বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। ‘সুশ্রী’ প্রকল্পে ২০২০-২১ বর্ষের সেই পরীক্ষার ‘রেজাল্ট কার্ড’ প্রকাশ করল স্বাস্থ্য দফতর। তাতে জেলা হাসপাতাল ক্যাটেগরিতে ৯৪.৫৮% নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এমআর বাঙুর হাসপাতাল। মহকুমা, স্টেট জেনারেল, গ্রামীণ, সুপার স্পেশালিটি, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্যাটেগরিতে ৯৯.৩৩% নম্বর পেয়ে প্রথম নন্দীগ্রাম স্বাস্থ্য-জেলার বড়রাঙ্কুয়ার কবিরাজ ইউএন দে গ্রামীণ হাসপাতাল।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, সুশ্রী প্রকল্পে হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ কেমন, স্বাস্থ্যবিধি কতটা মানা হচ্ছে, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও জীবাণুনাশের কাজ কতটা হচ্ছে, হাসপাতালের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ-সহ মোট ছ’টি বিষয় ছিল ৬০০ নম্বরের এই পরীক্ষায়। প্রথমে অন্তর্বর্তী মূল্যায়নে ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্তরের পরীক্ষায় বসার সুযোগ মিলেছে। পার্শ্ববর্তী হাসপাতালের পরীক্ষকদের থেকে ৭০ শতাংশ নম্বর পেয়ে একেবারে শেষ পর্যায়ে এক্সটার্নাল এগজ়ামিনেশনের সুযোগ মেলে। স্বাস্থ্য দফতরের তিন প্রতিনিধি তখন পরীক্ষা নেন। ২০২০-’২১ বর্ষের ওই পরীক্ষায় ৩৭৩টি হাসপাতাল দ্বিতীয় স্তরের পরীক্ষায় সুযোগ পেয়েছিল। সেখান থেকে ‘এক্সটার্নাল এগজ়ামিনেশন হয়েছিল ৩৩৮টি হাসপাতালের। তার মধ্যে জেলা স্তরের হাসপাতাল ছিল ২৩টি (১৮টি জেলা হাসপাতাল ও পাঁচটি জেলা থেকে মেডিক্যাল কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে)।
এ ছাড়াও মহকুমা স্তরের ৩৪টি, স্টেট জেনারেল ১৯টি, সুপার স্পেশ্যালিটি ন’টি এবং গ্রামীণ ও ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র মিলিয়ে ২৫৩টি হাসপাতাল ছিল। সব হাসপাতালেই করোনা রোগীর কমবেশি চাপ ছিল। শহরে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি এমআর বাঙুর হাসপাতালে করোনা রোগীর চাপ ছিল অত্যধিক। তার পরেও প্রতিটি মাপকাঠি সুষ্ঠু ভাবে বজায় রাখা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্য শিবিরের কর্তারা। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনার কাছে হেরে না-গিয়ে সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী লড়াই করেছেন। করোনার পাশাপাশি উন্নত মানের স্বাভাবিক পরিষেবাও বজায় রেখেছেন। প্রতিটি বিষয়ে তাঁরা প্রস্তুত ছিলেন। সেটিই এসেছে সামগ্রিক পর্যবেক্ষণে।’’
এমআর বাঙুর হাসপাতালের সুপার শিশির নস্কর বলেন, ‘‘যে-কোনও প্রতিযোগিতায় প্রথম হওয়া সব সময়েই আনন্দের। কিন্তু যেখানে রোগীদের সুষ্ঠু স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার মতো বিষয়ের উপরে পরীক্ষা হয়, তার গুরুত্বই আলাদা। করোনাকালে সামাজিক মূল্যবোধ যেখানে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছিল, সেখানে হাসপাতালের সর্বস্তরের কর্মীদের প্রচেষ্টা ও রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নজরদারির ফলেই এই সাফল্য এসেছে।’’ স্বাস্থ্য শিবির সূত্রের খবর, জেলা ক্যাটেগরিতে প্রথম হওয়া হাসপাতাল ৫০ লক্ষ এবং মহকুমা, স্টেট জেনারেল, গ্রামীণ, সুপার স্পেশালিটি, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্যাটেগরিতে প্রথম হাসপাতালটি ১৫ লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কার পাবে। প্রতিটি স্তরেই রয়েছে তিন লক্ষ টাকার উৎসাহ পুরস্কার। জেলা হাসপাতালের ক্ষেত্রে তার মাপকাঠি ন্যূনতম ৮৫ শতাংশ ও তার বেশি এবং অন্য ক্যাটেগরিতে ৭০ শতাংশ ও তার বেশি নম্বর পেতে হবে।