শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগদানের পরেই মমতার সঙ্গে অধিকারীদের দূরত্ব কয়েক যোজন বেড়ে গিয়েছে। ফাইল চিত্র।
সভায় যে যাবেন না, তা রবিবারই আনন্দবাজার ডিজিটালকে জানিয়েছিলেন তৃণমূলের দুই সাংসদ শিশির অধিকারী এবং দিব্যেন্দু অধিকারী। সোমবার যখন নন্দীগ্রামে মমতা সভা করছেন এবং বলছেন তাঁর নন্দীগ্রামের আন্দোলনের সময়ের কথা, তখন সেই সভাও দেখলেন না শিশির-দিব্যেন্দু। জানালেন, তাঁদের ‘অন্য কাজ’ আছে।
তখন নন্দীগ্রামের সভায় পৌঁছে বক্তৃতা শুরু করেননি তৃণমূল নেত্রী। তখন কাঁথির ‘শান্তিকু়ঞ্জে’-র অধিকারী পরিবারে বিরাজ করছিল নিস্তব্ধতা। অথচ কয়েক মাস আগে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তো বটেই, জঙ্গলমহল বা তৎসংলগ্ন এলাকায় মমতার জনসভা থাকলে চিত্রটা থাকত সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাঁথির অধিকারীবাড়ির অধিকাংশ সদস্যই মমতার সভায় উপস্থিত থাকতেন। মঞ্চে প্রথম সারিতেই দেখা যেত তাঁদের। বাড়িতে নির্দেশ থাকত, সকলেই যেন টিভি-তে দিদির সভায় নজর রাখেন। গত কয়েক মাসে চিত্র বদলে গিয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি-তে যোগদানের পরেই মমতার সঙ্গে অধিকারীদের দূরত্ব কয়েক যোজন বেড়ে গিয়েছে।
সোমবার দুপুরে কাঁথির বাড়িতেই ছিলেন জেলা তৃণমূলের সদ্য পদচ্যুত সভাপতি তথা বর্তমান চেয়ারম্যান শিশির। জানালেন, টিভি-তেও নেত্রীর সভা দেখছেন না তিনি। বাড়িতে থাকলেও দলনেত্রীর সভায় কেন নজর রাখবেন না? উত্তরে এই অশীতিপর রাজনীতিক বলছেন, ‘‘আমি এখন কোনও কিছুর ওপরেই নজর রাখছি না। আমি এখন আউট অব পলিটিক্স। কী দরকার নজর রাখার!’’
আরও পড়ুন: আজ মমতার গড়ে মিছিলে শুভেন্দু, নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর ডেরায় সভা মমতার
প্রসঙ্গত, প্রায় এক দশকের বেশি সময় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি থাকার পর গত ১৩ জানুয়ারি শিশিরকে সরিয়ে ওই পদে বসানো হয়েছে মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে। শিশিরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান পদ থেকেও। সাংগঠনিক ডানা ছেঁটে তাঁকে দেওয়া হয়েছে জেলা সংগঠনের চেয়ারম্যানের পদ। বর্ষীয়ান শিশির বোঝেন সেই পদের ‘গুরুত্ব’। তাই নিজে থেকেই নন্দীগ্রামে মমতার সভায় না যাওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলেন তিনি। বাবার দেখানো পথে হেঁটে সভায় যাননি না তাঁর সাংসদপুত্র দিব্যেন্দুও। অধিকারী পরিবার সূত্রের দাবি, দলের তরফে নন্দীগ্রামে মমতার সভা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে কেউ কোনও যোগাযোগ করেননি। তাই খাতাকলমে এখনও তৃণমূলের সাংসদ ও সদস্য হলেও নন্দীগ্রামের সভায় অনুপস্থিতিকেই শ্রেয় মনে করেছে অধিকারী পরিবার। তাই এদিন বাবার মতোই টিভি-তে মমতার সভা দেখার উদ্যোগ নেই দিব্যেন্দুর। তিনি জানিয়েছেন, মাস ছয়েক আগে থেকেই এই দিনের কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তাই চরম ব্যস্ততার কারণে টিভি-তেও নেত্রীর বক্তৃতা দেখতে বা শুনতে পারবেন না।