Mahua Moitra

‘তিনি ভারতে, দুবাই থেকে তাঁর আইডিতে লগইন’! নতুন ‘তথ্য’ দিল বিজেপি, ফের চ্যালেঞ্জ করলেন মহুয়া

শনিবার এক্স হ্যান্ডলে নিশিকান্ত লিখেছেন, কিছু টাকার জন্য এক জন সাংসদ গোটা দেশের নিরাপত্তা বন্ধক দিয়েছেন। সেই অভিযুক্ত সাংসদ যখন দেশে, তখন দুবাই থেকে তাঁর সংসদের আইডি খোলা হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৩ ১৭:০৪
Share:

বাঁ দিক থেকে মহুয়া মৈত্র, নিশিকান্ত দুবে। — ফাইল চিত্র।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র যখন ভারতে, তখন দুবাই থেকে তাঁর সংসদীয় আইডিতে লগইন করা হয়েছে। এতে বিঘ্নিত হয়েছে গোটা দেশের নিরাপত্তা। এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে এমনটাই অভিযোগ করলেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তাঁকে এক্সেই পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়লেন মহুয়া। জানালেন, সাংসদদের বিষয়ে সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনুক এনআইসি (ন্যাশনাল ইনফরমেটিকস সেন্টার)। দেখাক, ব্যক্তিগত সচিব এবং গবেষক বা ইন্টার্ন বা কর্মীরা আইডি দিয়ে যখন সংসদে লগইন করেন, তখন সেখানে সাংসদেরাও উপস্থিত থাকেন। তার পরেই মহুয়া কটাক্ষ করেছেন গৌতম আদানিকে। জানিয়েছেন, তাঁর চুক্তি মেনে ছ’মাস মুখ বন্ধ রাখবেন না। দ্বিতীয় চুক্তি মেনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মুখ খোলাও বন্ধ রাখবেন না।

Advertisement

নিশিকান্ত অভিযোগ করেছিলেন, মহুয়া তাঁর সংসদের আইডি ব্যবসায়ী দর্শন হীরানন্দানিকে দিয়ে দিয়েছিলেন। তা ব্যবহার করে হীরানন্দানি আদানিদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন নথিভুক্ত করতেন। মহুয়া সেগুলিই তুলতেন সংসদে। জড়িয়ে দিতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামও। শনিবার এক্সে নিশিকান্ত জানিয়েছেন, মহুয়া এ রকম করেছেন বলে গোটা দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘‘কিছু টাকার জন্য এক জন সাংসদ গোটা দেশের নিরাপত্তা বন্ধক দিয়েছেন। সেই অভিযুক্ত সাংসদ যখন দেশে, তখন দুবাই থেকে তাঁর সংসদে প্রবেশের আইডি খোলা হয়েছে। এই এনআইসির উপর রয়েছেন গোটা ভারত সরকার, দেশের প্রধানমন্ত্রী, অর্থ মন্ত্রক, কেন্দ্রীয় সংস্থা। তৃণমূল কংগ্রেস এবং বিরোধীরা কি এখনও এই নিয়ে রাজনীতি করবে? জনতাই স্থির করুন। এনআইসি এই তথ্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়েছে।’’

পাল্টা জবাব দিয়েছেন মহুয়া। তিনি এনআইসির কাছে অনুরোধ করেছেন, এখনই সাংসদদের বিষয়ে সমস্ত তথ্য প্রকাশ্যে আনা হোক। কৃষ্ণনগরের সাংসদ লিখেছেন, ‘‘এনআইসি সব তথ্য প্রকাশ করে দেখাক যে, যখন ব্যক্তিগত সচিব, গবেষক, ইন্টার্ন বা কর্মীরা সাংসদদের আইডি ব্যবহার করেন, তখন সেখানেই উপস্থিত থাকেন তাঁরা। তা বলে ভুয়ো ডিগ্রিধারীদের ব্যবহার করবেন না। আসল সত্য প্রকাশ্যে আনুন।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা পিটিআই দাবি করে, হীরানন্দানি ‘হলফনামা’য় স্বীকার করেছেন যে তিনি মহুয়াকে ব্যবহার করে লোকসভায় আদানি গোষ্ঠী সম্পর্কিত প্রশ্ন তুলিয়েছেন। মহুয়া শিল্পপতিকে সংসদের লগ-ইন আইডি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ তুলেছিলেন নিশিকান্ত। সেটাও স্বীকার করেছেন হীরানন্দানি। ওই হলফনামার সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মহুয়া। এ বার এনআইসিকে তথ্য প্রকাশ করতে বলেও আরও এক বার খুঁচিয়ে দিলেন সেই প্রসঙ্গ। জানালেন তথ্য প্রকাশ করা হলেও তা যেন ভুয়ো না হয়। এখানেই থামেননি তিনি। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে নিশিকান্ত যে অভিযোগ করেছেন, তারও পাল্টা দিয়েছেন মহুয়া। তিনি লিখেছেন, ‘‘আদানির শেযার কিনেছেন অপরিচিত কিছু এফপিআই (ফরেন পোর্টফোলিয়ো ইনভেস্টমেন্ট), যাদের উৎস সেবি খুঁজে পায়নি। মুম্বই বিমানবন্দর কেনার জন্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ছাড়পত্র পেয়েছেন তিনি। জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে এখানেই আসল প্রশ্ন। সংসদের ইমেল আইডির অ্যাকসেস তাঁর ব্যক্তিগত সচিব, ইন্টার্নদের হাতে থাকে। তাকে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়ের সঙ্গে জড়ানো যায় না।’’

এর পর আদানিকেও কটাক্ষ করেছেন মহুয়া। তিনি জানিয়েছেন, ‘শান্তি’র বদলে ছ’মাস চুপ থাকার জন্য আদানি যে চুক্তি করতে বলেছিলেন, তা তিনি মানছেন না। দ্বিতীয় চুক্তিতেও তিনি রাজি নন, যেখানে আদানির বিরুদ্ধে সংসদে বলা গেলেও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে চুপ থাকতে হবে। মহুয়া লিখেছেন, ‘‘প্রশ্ন না করার জন্য নগদ দিতেন আদানি। এখন তাঁকে ভুয়ো নগদের বিনিময়ে প্রশ্নকাণ্ড তৈরির জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি এও জানিয়েছেন, আপাতত দুর্গাপুজো নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ক’জোড়া জুতো রয়েছে, গোনার জন্য বাড়িতে সিবিআইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। তার আগে ভারতীয়দের থেকে যে ১৩ হাজার কোটি কয়লার টাকা আদানি নিয়েছেন, তা নিয়ে এফআইআর হোক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement