Consumer Protection Commission

বিচারক নেই, মামলার পাহাড় জমেছে ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে

রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন ছাড়াও কলকাতায় রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন রয়েছে। সেখানে ছ’জন সদস্য থাকার কথা। আছেন তিন জন।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৫২
Share:

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

রাজ্যের ১৫টি জেলায় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের সভাপতির (বিচারক) পদ ফাঁকা। আবার, অধিকাংশ জেলায় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে যথেষ্ট সদস্য নেই। ফলে দীর্ঘ দিন ধরে ঝুলে রয়েছে কয়েক হাজার মামলা। এতে বিচারপ্রার্থী সাধারণ নাগরিকেরা চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। সারা রাজ্যে ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে বিচারক এবং সদস্যের পদ ফাঁকা থাকার বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি জরুরি বৈঠক করেছেন দফতরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘কমিশনের সভাপতি, সদস্য না থাকায় সমস্যা তো হচ্ছেই। আশা করছি, দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়ার কাজ সম্পূর্ণ হবে।’’

Advertisement

রাজ্যের প্রতিটি জেলায় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন ছাড়াও কলকাতায় রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা কমিশন রয়েছে। সেখানে ছ’জন সদস্য থাকার কথা। আছেন তিন জন। বছর পাঁচেক আগে আসানসোল ও শিলিগুড়িতে সার্কিট বেঞ্চ তৈরি হলেও সেখানে এখনও বিচারক নেই। ওই দু’টি সার্কিট বেঞ্চে দু’জন করে সদস্যের মধ্যে মাত্র এক জন করে রয়েছেন।

ক্রেতা সুরক্ষা দফতর সূত্রের খবর, জেলার ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে সভাপতি নির্বাচিত হন জেলা দায়রা আদালতের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক। ১৫টি জেলায় ওই পদে কেউ নেই। বেশ কয়েকটি জেলার সভাপতিকে দু’টি জেলার দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘এক জন বিচারককে দু’টি জেলার দায়িত্ব দেওয়ায় তাঁর পক্ষে কয়েক হাজার মামলার রায়দান করতে গিয়ে সামগ্রিক বিচার প্রক্রিয়ায় দেরি হচ্ছে।’’ উদাহরণস্বরূপ ওই আধিকারিক জানান, হুগলি জেলায় ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে বিচারক না থাকায় সেখানকার কাজ সামলাতে হচ্ছে হাওড়ার ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের সভাপতিকে। আবার, কলকাতায় ইউনিট-১ জেলা ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের সভাপতি সামলাচ্ছেন এই জেলারই ইউনিট-৪ কমিশনের অতিরিক্ত দায়িত্ব। যার জন্য ইউনিট-১ কমিশনে প্রায় দেড় হাজার মামলা পড়ে রয়েছে।

Advertisement

দফতর সূত্রের খবর, কলকাতা জেলার ইউনিট-৪ ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের অফিসটি রয়েছে শিয়ালদহ আদালত ভবনে। অভিযোগ, সেই অফিসে আলাদা শৌচাগার না থাকায় সংশ্লিষ্ট সভাপতিকে অধিকাংশ সময় নিউ মার্কেটে কলকাতা জেলার ইউনিট-১ ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনের অফিস থেকে অনলাইনে বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়। দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই বিচারক নভেম্বর মাসে অবসর নেবেন। সে ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বাড়বে।

ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, রায়দানের সময়ে ফোরাম গঠিত হয়। শুনানির সময়ে সেই ফোরামের তিন জন প্রতিনিধির (এক জন সভাপতি, বাকি দু’জন সদস্য) উপস্থিত থাকার কথা। কিন্তু অভিযোগ, অধিকাংশ জেলায় ফোরামের প্রতিনিধি না থাকায় বিচারপ্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটছে। যেমন, বীরভূমের ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে তিন জন প্রতিনিধির মধ্যে রয়েছেন মাত্র এক জন। বিচারক অবসর নিয়েছেন বছরখানেক আগে। এক জন নন-জুডিশিয়াল সদস্য অগস্টে অবসর নিয়েছেন। ফলে, সেপ্টেম্বর থেকে বীরভূম জেলা ক্রেতা সুরক্ষা কমিশনে শুনানি হচ্ছে না।

‘কনজ়িউমার কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি হিরণ্ময় ব্রহ্মচারী বলেন, ‘‘একটি মামলার শুনানির দিন প্রথমে ধার্য হয়েছিল ২৯ অগস্ট। কিন্তু বিচারক না থাকায় সে দিন শুনানি হয়নি। পরবর্তী শুনানির দিন স্থির হয়েছে আগামী বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি। বিচারকের অভাবে আইনের উদ্দেশ্যই নষ্ট হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement