প্রতীকী ছবি।
অভিযোগপত্রে স্বামীর উল্লেখ থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই বলে সোমবার আদালতে জানালেন নদিয়ায় গণধর্ষণে মৃত নাবালিকার মা। ইতিমধ্যে রবিবার অংশুমান বাগচী নামে আরও এক জনকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এই নিয়ে মোট ন’জন গ্রেফতার হল। এক নাবালক বাদে বাকিদের এ দিন বিশেষ পকসো আদালতে হাজির করা হলে বিচারক সুতপা সাহা তাদের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেন। আগামী ১৬ জুলাই তাদের ফের আদালতে হাজির করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
গত শুক্রবার এই মামলায় চার্জশিট পেশ করেছে সিবিআই। কিন্তু মৃতার মা যেখানে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানিয়েছিলেন যে তাঁর স্বামীর উপস্থিতিতেই মেয়ের সৎকার করা হয়েছে, সে ক্ষেত্রে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে তাঁকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না কেন সেই প্রশ্ন তুলছিল অভিযুক্ত পক্ষ। মৃতার বাবা ছাড়াও অভিযোগপত্রে থাকা পরিমল বিশ্বাসের নাম চার্জশিটে বাদ দেওয়া হল কেন, সেই প্রশ্নও ওঠে। এ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য জানানোর জন্য মৃতার মা-কে আদালত ডেকে পাঠানো হয়েছিল। বিচারকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ওই দু’জনের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ জানাননি। পরে আদালতের নির্দেশে তিনি লিখিত ভাবেও তা জানান।
অভিযুক্ত পক্ষের এক আইনজীবী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন আদালতে বলেন, মৃতার মা তাঁর অভিযোগপত্রে মেয়ের মৃত্যুকালীন জবানবন্দির উল্লেখ করেননি, অথচ চার্জশিটে তেমন কথাই বলা হয়েছে। ওই রাতে চিকিৎসকের কাছে যেতে তাঁদের ভয় দেখানো হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু মেয়েটির মা চিকিৎসকের কাছে গিয়েও ধর্ষণের কথা বলেননি। বরং হজম এবং ঋতুস্রাবের সমস্যার কথা বলেছিলেন, তার কারণ কী?
অভিযোগপত্রে নাম থাকা সত্ত্বেও অংশুমানকে আগে গ্রেফতার করা হয়নি, এমনকি ৮৮ দিন পর্যন্ত গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়নি কেন, সেই প্রশ্ন তুলে অভিযুক্তদের তরফে দাবি করা হয়, সিবিআই তাদের নির্দেশ মতো আদালতে কথা বলার জন্য অংশুমানকে চাপ দিচ্ছিল। সে রাজি না হওয়াতেই চার্জশিটে তার নাম ঢোকে, পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আইনজীবী অপূর্ব বিশ্বাস জানান, সিবিআই সমরেন্দু গয়ালির বাড়ি ‘সিল’ করে রাখায় তার স্ত্রী বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না। এই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান তিনি।
সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, পুলিশ ও অভিযুক্তদের আঁতাঁতের অভিযোগ ওঠার পরেই হাই কোর্ট তাদের তদন্তভার দেয়। আইনজীবী রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, সে ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তে পুলিশের ভূমিকার কথা উঠে এল না কেন? সিবিআইয়ের আইনজীবী জানান, তদন্ত শেষ হয়নি।