R G Kar Medical College And Hospital Incident

‘আমরা মেয়ের দেহ রাখতে চেয়েছিলাম, পুলিশের অতি সক্রিয়তায় পারিনি’, মন্তব্য নির্যাতিতার অভিভাবকদের

এ বার রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ দেশের বিশিষ্টদের দ্বারস্থ হয়েছে মৃতার পরিবার। মৃতার মা নিজের মনের কথা চিঠির আকারে লিখে পাঠিয়েছেন তাঁদের কাছে।

Advertisement

নীলোৎপল বিশ্বাস

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৪:৫৯
Share:

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।

২৪ দিন অতিক্রান্ত। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে খুন এবং ধর্ষণের ঘটনায় এখনও উত্তর মিলল না বহু প্রশ্নের। সিবিআই তদন্ত চালালেও এখনও স্পষ্ট হল না, এই ঘটনায় জড়িত কি এক জনই? নাকি যুক্ত আছে আরও কেউ? কেনই বা এই খুন ও ধর্ষণ? উত্তর না পেয়ে এ বার রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, রাজ্যপাল, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ দেশের বিশিষ্টদের দ্বারস্থ হয়েছে মৃতার পরিবার। মৃতার মা নিজের মনের কথা চিঠির আকারে লিখে পাঠিয়েছেন তাঁদের কাছে।

Advertisement

মৃতার পরিবার সূত্রে খবর, ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে গত শনিবার। কয়েকটি জায়গায় পাঠানো হয়েছিল মেলে, কয়েকটি গিয়েছিল পোস্ট অফিসের মাধ্যমে। মৃতার মা বলেন, ‘‘রাতে ঘুম হয় না। সারা রাত শুয়ে শুয়ে ভাবি কী থেকে কী হয়ে গেল! মনে হচ্ছিল, আমার মনের কথাটা কাকে লিখতে পারি! সমস্ত ঘটনার বিবরণ দিয়ে তাই এই চিঠি লিখেছি।’’ এর পর বলেন, ‘‘আমরা মেয়ের মৃতদেহ রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের অতি-সক্রিয়তায় পারিনি। আমরা তো আস্থা রেখেছিলাম পুলিশের উপরে।’’ কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন মৃতার মা।

পাশে বসা মৃতার বাবারও চোখ তখন জলে ভেসে যাচ্ছে। কোনও মতে সামলে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যে ভাবে প্রথম থেকে সমস্তটা হয়েছে, তাতে আমাদের সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কোনও ভাবেই এক জনের পক্ষে আমার মেয়েকে এ ভাবে খুন করা সম্ভব বলে বিশ্বাস করি না। পুলিশের উপরে বিশ্বাস রেখেই এগিয়েছিলাম। মুখ্যমন্ত্রীও আমাদের বাড়ি এসে আশ্বাস দিয়ে যান। আমরা তাঁর বিরোধী নই, কিন্তু বিচার চাই। যে ভাবে পুলিশ সমস্তটা সাজাচ্ছিল, সেটা বুঝতে পেরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। ভাল কোনও এজেন্সিকে দিয়ে তদন্ত করানো হোক, আর্জি রেখেছিলাম। আদালত সিবিআই-কে তদন্তভার দেওয়ার কথা মনে করেছে।’’

Advertisement

কিন্তু এখনও পর্যন্ত বহু প্রশ্নেরই তো উত্তর নেই..! থামিয়ে দিয়ে কোনও মতে শাড়ির আঁচলে চোখ মুছে মৃতার মা বললেন, ‘‘আমরা খুব সাধারণ পরিবারের। একটা টালির ঘর থেকে মেয়েকে বড় করে তুলেছি। ওর বাবা সেলাইয়ের ব্যবসা শুরু করেছিল। তিন জন মানুষের এই সংসারে আমি আর ওর বাবা কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম, আর মেয়ে পড়াশোনায়! কোনও দিন এর আগে ময়না তদন্ত দেখিনি। আমরা তো বুঝতেই পারছি না, কাকে বিশ্বাস করব?’’

এর পরে তাঁর মন্তব্য, ‘‘সারা জীবন ধরে কষ্ট করে যা করেছিলাম, সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার মনের কথাটা পড়ে যদি অন্তত দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা হয়, সেই আশা নিয়েই এই চিঠি লিখে পাঠিয়েছি। আমরা কারও বিরুদ্ধে নই, রাজনীতির অঙ্গও হতে চাই না। শুধু বিচার চাই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement