calcutta medical college

Covid-19: ভেন্টিলেটর সাপোর্টেই যমজ প্রসব কোভিড আক্রান্তের, বিরল সাফল্য মেডিক্যালে

কোভিডের ফলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমছিল প্রসূতির।গর্ভস্থ শিশুদেরও অক্সিজেনের ঘাটতি হচ্ছিল। তাই সময়ের আগেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত।

Advertisement

সারমিন বেগম

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২১ ১৯:০৬
Share:

প্রতীকী ছবি

কোভিড আক্রান্ত প্রসূতিকে বাঁচাতে ঝুঁকির অস্ত্রোপচার কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ভেন্টিলেটর সাপোর্টেই অন্তঃসত্ত্বার অস্ত্রোপচার করা হয়। জন্ম হয় যমজ সন্তানের। আপাতত মা এবং দুই শিশুই সুস্থ। সদ্য দুই শিশুকে নিয়ে মা হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন বলে জানান চিকিৎসক। ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা অবস্থায় করোনা আক্রান্তের যমজ সন্তান প্রসব পূর্ব ভারতে নজিরবিহীন বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

Advertisement

জুলাই মাসে কোভিডে সংক্রমিত হয়ে অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমছিল জয়া মাঝির। হাওড়ার শ্যামপুরের বাসিন্দা জয়া। তখন আট সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন তিনি। ফলে দ্রুত তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। একদিকে করোনা সংক্রমণে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমছিল, অন্যদিকে গর্ভস্থ শিশুদের কারণে বাড়ছিল মানসিক চাপ। দুইয়ে মিলে জয়ার অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক হয়ে পড়ে বলে জানান চিকিৎসকরা।

Advertisement

এই অবস্থায় তাঁকে মেডিক্যাল কলেজের এসএসবি বিল্ডিংয়ের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। ফুসফুসে সংক্রমণ ছাড়ানোয় শ্বাসকষ্টেও ভুগছিলেন জয়া। প্রথমে আইসিইউতে এবং পরে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রাখা হয় তাঁকে। কিন্তু অবস্থার সে রকম উন্নতি হচ্ছিল না। সেই সময় মাকে বাঁচাতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান চিকিৎসকরা। প্রসূতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক পার্থ মুখোপাধ্যায়ের কথায়,‘‘অস্ত্রোপচার না করলে মায়ের জীবন-মরণ সমস্যা তৈরি হত। রোগীর শরীরে অক্সিজেন স্যাচুরেশন দ্রুত কমছিল, ফলে গর্ভস্থ শিশুরাও পর্যাপ্ত অক্সিজেন পাচ্ছিল না। ওই সময় ক্রিটিক্যাল কেয়ার, অ্যানাস্থেশিয়া, শিশু বিভাগ এবং আমরা যৌথ ভাবে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।’’

করোনা আক্রান্ত অন্তঃসত্ত্বাদের জন্য মেডিক্যাল কলেজে আলাদা ওয়ার্ড এবং অপারেশন থিয়েটার রয়েছে। কিন্তু জয়ার শারীরিক অবস্থা জটিল থাকায় এসএসবি বিল্ডিংয়ে ক্রিটিক্যাল কেয়ার এবং অ্যানাস্থেশিয়া-সহ একাধিক বিভাগের তত্ত্বাবধানে তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়।

স্বাভাবিক নিয়মে ১০ মাস হলে গর্ভস্থ শিশুর জন্ম হয়। এ ক্ষেত্রে জয়ার শারীরিক অবস্থার কথা ভেবে আট মাস অর্থাৎ সময়ের আগেই অস্ত্রোপচার করা হয়। জন্ম হয় দুই পুত্র সন্তানের। তবে এখানেই সমস্যার শেষ নয় বলে জানান পার্থ। সাধারণত সদ্যোজাতদের ওজন আড়াই কিলোগ্রাম মতো হয়ে থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে জন্মের পর দুই সদ্যোজাতের ওজন ছিল দেড় কিলোগ্রাম এবং এক কিলো দু’শো গ্রামের মতো। জন্মের পর সদ্যোজাতদের শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি থাকায় অক্সিজেনও দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। শিশু বিভাগের দক্ষতাতেই জয়ার দুই শিশু সুস্থ হয়ে ওঠে বলে জানান পার্থ।

এর আগে আরেকটি ঘটনায় জুন মাসে ভেন্টিলেটর সাপোর্টে থাকা প্রসূতির অস্ত্রোপচার করা হলেও শেষ পর্যন্ত মাকে বাঁচানো যায়নি। তাই জয়ার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা চিন্তিত এবং সতর্ক দুই-ই ছিলেন। এ বার মা এবং দুই সদ্যোজাতই সুস্থ থাকায় খুশি চিকিৎসকরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement