প্রসব বেদনায় মাতৃযানে ছটফট করছেন প্রসূতি। সামনে পথ আটকে দাঁড়িয়ে বুনো হাতির দল। সে দলে বেশ কয়েকটি শাবকও। ফলে নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন মাতৃযানের চালক। একদিকে প্রসব বেদনায় প্রসূতির চিৎকার, অন্য দিকে মাতৃযানের হেড লাইটের আলো দেখে হাতির দলও চিৎকার শুরু করে। ভয় পেয়ে আলো নিভিয়ে দেন চালক। এভাবেই কেটে যায় প্রায় আধঘণ্টা।
এই বিভীষিকার মধ্যে বুধবার রাত ২টো নাগাদ শাশুড়ির চেষ্টায় মাতৃযানেই ফুটফুটে নবজাতকের জন্ম দিলেন বধূ। কিছুক্ষণ পরে হাতির দল রাস্তা ছেড়ে চা বাগানে ঢুকে গেলে দ্রুতগতিতে মাতৃযান নিয়ে ধূপগুড়ি হাসপাতালে যান চালক। সেখানেই নাড়ি কাটলেন চিকিৎসকরা।
এ দিন রাত ১০টা নাগাদ ধূপগুড়ির গয়েরকাটা চা বাগানের শ্রমিক লাইনের বাসিন্দা মতিয়াস মিনজের স্ত্রী প্রেমিকা মিনজের প্রসব বেদনা ওঠে। ধূপগুড়ি হাসপাতালে খবর পাঠানো হলে পৌঁছায় মাতৃযান। মহিলাকে হাসপাতালের আনার পথেই ঘটে বিপত্তি। এটাই প্রথম সন্তান প্রেমিকার। ধূপগুড়ি হাসপাতালে ভর্তি মা ও শিশু সুস্থ বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্রসূতির সঙ্গে মাতৃযানে থাকা নবজাতকের ঠাকুরমা বার্তিলা মিনজ বলেন, “ রাত দশটায় বৌমার প্রসব বেদনা ওঠে। মাতৃযান আসার পর বৌমাকে নিয়ে হাসপাতালের দিকে যাত্রা করি। তখন রাত প্রায় ১১ টা বাজে । বাড়ি ছেড়ে কিছুদূর আসতেই দেখি হাতির দল রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে আছে। মাতৃযান দাঁড়িয়ে পড়ে। বৌমা তখন ব্যাথায় ছটফট করছিল। যখন দেখি সন্তান প্রসব হবে তখন নিজেই চেষ্টা করে প্রসব করাই।”
চালক বিকাশ রায় জানান, “অন্তঃসত্ত্বা মহিলাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিলাম। কিন্তু চা বাগানে হাতি দেখে আমি তখন নিরুপায়। বাধ্য হয়ে মাতৃযান দাঁড় করিয়ে রাখি। এর মধ্যে মহিলা মাতৃযানে সন্তান প্রসব করেন।”
বৃহস্পতিবার দিনভরই চা বাগান এলাকায় চর্চার বিষয় ছিল এই ঘটনা।