প্রতীকী ছবি
মণ্ডপের বাঁশ পড়েনি। তবে মেঠো রাস্তার পাশে ফুটে ওঠা কাশফুল জানান দিচ্ছে, পুজো আসছে। কিন্তু মন ভাল নেই কোচবিহারের বড় কৈমারি গ্রামের। কৈলাস থেকে উমা বাংলার ঘরে আসার আগে কৈমারির এক মা মেয়েকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন কলকাতা। ২৭ সেপ্টেম্বর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেয়ের কিডনি প্রতিস্থাপন হবে। কিডনি দেবেন মা। খরচ কয়েক লক্ষ টাকা। কিডনি পেলেও অস্ত্রোপচার ও আনুষাঙ্গিক চিকিৎসার সেই টাকা কোথা থেকে জোগাড় হবে, সেই চিন্তা গ্রাম জুড়ে।
শীতলখুচি ব্লকের জটামারির বড় কৈমারি গ্রাম। সেখানকার নির্মলা পাল জলপাইগুড়ি আইন মহাবিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। দু’টি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছে তাঁর। ঠিক হয়েছে, মা অনিমা পাল নিজের একটি কিডনি মেয়েকে দেবেন। নির্মলার বাবা সুনীল পাল হাঁস-মুরগির ছোটখাট ব্যবসা করেন। কিডনি পেলেও মেয়ের চিকিৎসার বিপুল খরচ জোগাড় করতে ছুটে বেড়াচ্ছেন তিনি। অনিমা ফোনে বলেন, ‘‘দু’মাস হল কলকাতায় আছি। এখন পর্যন্ত খরচের যা বহর, তাতেই জমি বন্ধক দিতে হয়েছে।’’
নির্মলার জেঠতুতো দাদা বাঁধন পাল বলেন, ‘‘কাকা এলাকার পুজো কমিটি থেকে ক্লাব, সবার কাছে সাহায্যের জন্য যাচ্ছেন। বোন, কাকিমা কলকাতায়। বোনের ডায়ালিসিস চলছে। কিডনি প্রতিস্থাপনের তারিখ ঠিক হয়ে গেছে। কিন্তু এখনও সব টাকা জোগাড় হয়নি।’’ কারও থেকে সাহায্য নিয়ে, কারও থেকে টাকা ধার করে নির্মলাকে সুস্থ করতে তুলতে মরিয়া পরিবারটি। নির্মলাও সাহায্যের আর্জি জানিয়েছেন তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে। লিখেছেন, ‘কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। আমার পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা অসম্ভব হয় উঠেছে।’ অনিমা জানান, তাঁদের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড রয়েছে। কিন্তু তার থেকে কতটা খরচের সুরাহা হবে, বেসরকারি হাসপাতাল থেকে সে ব্যাপারে এখনও স্পষ্ট কিছু জানতে পারেননি তাঁরা।
নির্মলার পড়শি বলেন, ‘‘সামনে পুজো, কিন্তু আনন্দ নেই পাড়ায়। আমরাও গরিব। তাই তেমন বেশি কিছু করতে পারিনি। নির্মলা যেমন ভাল, ওর মা-ও যেন সাক্ষাৎ দুর্গা।’’