কলেজ ছাত্রীকে নিয়ে থানায় যাচ্ছেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
কলেজছাত্রী মেয়ের শ্লীলতাহানি রুখতে গিয়ে মৃত্যু হল মায়ের। গোটা ঘটনায় অভিযুক্ত শাসক দলের এক স্থানীয় নেতা। এই অভিযোগকে ঘিরেই জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ জনতা।
শাসক দলের নেতার শাস্তি চেয়ে সেই বিক্ষোভে শামিল হল বিজেপি। অভিযুক্ত কুশ বেরাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার গভীর রাতে। বাগনানের গোপালপুরের বাসিন্দা ওই কলেজছাত্রী।
প্রতিবেশীদের দাবি, ওই ছাত্রী রাতে বাড়ির ছাদে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় পাঁচিল টপকে কার্নিস বেয়ে ছাদে উঠে আসে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের স্বামী কুশ বেরা। তিনি নিজে ওই এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা।
আরও পড়ুন: মোদী-চিনফিং দেখা হচ্ছে নভেম্বরে, বৈঠক হবে কি?
অভিযোগ, কুশ ছাদে উঠে পিছন থেকে ওই ছাত্রীকে জাপটে ধরে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। ভয় পেয়ে চিৎকার করে ওঠেন ওই কলেজছাত্রী। সেই চিৎকার শুনে ছাদে উঠে আসেন ছাত্রীর মা। প্রতিবেশীদের একাংশের কথায়, অভিযুক্ত সেই সময় ছাত্রীর মাকে ধাক্কা মেরে সিঁড়ি দিয়ে নেমে পালিয়ে যান। ধাক্কা খেয়ে টাল সামলাতে না পেরে সিঁড়ি দিয়ে পড়ে মাথায় আঘাত পান ছাত্রীর মা। রাতেই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালে। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখানেই বুধবার সকালে মৃত্যু হয়েছে ওই মহিলার।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা থানায় জমায়েত হয়ে অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানান। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, অভিযুক্ত শাসক দলের নেতা হওয়ায় পুলিশ প্রথমে গড়িমসি করে। পরে বিক্ষোভে শামিল হন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং সৌমিত্র খাঁ। লকেট ওই ছাত্রীকে নিয়ে বাগনান থানায় যান। সেখানে লকেট বলেন, ‘‘গোটা দিন কেটে গেল তার পরেও অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। অথচ অভিযুক্ত পরিচিত। পুলিশ যদি ব্যবস্থা না নেয় তা হলে আমরা বড় আন্দোলনের পথে যাব।”
আরও পড়ুন: নেপালের জমি দখল করে চিনের রাস্তা, ঘোরানো হচ্ছে নদীর গতিপথও
এর পর এ দিন বিকেলে গ্রেফতার করা হয় অভিযুক্ত কুশকে। অন্য দিকে, সাংসদ সৌমিত্র খাঁ বিজেপি কর্মী সমর্থকদের নিয়ে বাগনানের খাদিনান মোড়ে অবরোধ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট অবরুদ্ধ থাকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক। পুলিশ দ্রুত অভিযুক্তকে গ্রেফতারেরের আশ্বাস দিলে তবে অবরোধ ওঠে। ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন,‘‘ অভিযুক্তকে আড়াল করার প্রশ্নই ওঠে না। আইন আইনের পথে চলবে। ওই ব্যক্তি যদি অপরাধ করে থাকেন তবে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।”