illegal liquor shop

Poisonous liquor: বিষমদে মৃত আরও দুই, নালিশ শাসানির

মদের আড্ডার মালিক প্রতাপ কর্মকারকে এ দিন হাওড়া আদালতে তোলা হয়। আদালত ধৃতকে ১১ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০২২ ০৬:১১
Share:

ফাইল চিত্র।

হাওড়ার বিষমদ কাণ্ডে প্রাণহানি বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক চাপান-উতোরের পারদও ক্রমাগত চড়ছে। বৃহস্পতিবার মৃতের সংখ্যা ১১ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৩। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে আরও দু’জনের মৃত্যু হয়। যদিও এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, মৃতের সংখ্যা অনেক বেশি এবং সেটা যাতে প্রকাশ্যে না-আসে, তার জন্য লাগাতার শাসানি চলছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, আরও চার জ‌ন বুধবার রাতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁদের টিএল জয়সওয়াল ও হাওড়া জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মালিপাঁচঘড়া থানার সামনে এসইউসি-র পক্ষ থেকে বিক্ষোভ দেখানো হয়। বিষমদে গজানন বস্তির ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি ওঠে। এ দিন গজানন বস্তিতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেন, এই ঘটনায় অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টা করছে তৃণমূল ও পুলিশ। থানার ৫০ গজের মধ্যে মদের ঠেক চলা সত্ত্বেও পুলিশের কাছে তার খবর ছিল না কেন, সেই বিষয়ে পুলিশকে ডেকে প্রশ্ন করার জন্য আদালতের উদ্দেশে আবেদন জানান তিনি।

বিষমদ-কাণ্ডে বুধবার রাত পর্যন্ত ঠিক ক’জন প্রাণ হারিয়েছেন, পুলিশের তরফে তা সরকারি ভাবে ঘোষণা করা না-হলেও রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর বুধবার বিকেলে ১০ জনের মৃত্যুর ঘটনা স্বীকার করে। পরে রাতে আর এক জন মারা যাওয়ায় মৃতের সংখ্যা হয় ১১। এ দিন জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষমদ খেয়ে টিএল জয়সওয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নীলেশ সিংহ ও হাওড়া জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কামেশ্বর রায়ের মৃত্যু হয়েছে। এলাকার বাসিন্দারা এ দিনেও অভিযোগ করেন, মৃতের প্রকৃত সংখ্যা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। কত জনের মৃত্যু হয়েছে, তা বলা চলবে না বলে ‘কিছু লোক’ বস্তিতে এসে শাসিয়ে গিয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি, যত লোকের প্রাণহানির কথা বলা হচ্ছে, বিষমদ খেয়ে তার থেকে অনেক বেশি মানুষ মারা গিয়েছেন।

Advertisement

বিষমদ কাণ্ডে ধৃত, মদের আড্ডার মালিক প্রতাপ কর্মকারকে এ দিন হাওড়া আদালতে তোলা হয়। আদালত ধৃতকে ১১ দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে।

উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় এ দিনেও গজানন বস্তি এলাকার চার পাশে পুলিশবাহিনী মোতায়েন ছিল। মদের ঠেক পুরোপুরি বন্ধ করা, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্ত সব পরিবারের ক্ষতিপূরণ এবং অসুস্থদের সরকারি খরচে চিকিৎসার দাবিতে এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ মালিপাঁচঘড়া থানায়স্মারকলিপি দেন এসইউসি-র হাওড়া জেলা কমিটির বিশ্বজিৎ মিত্র, শুকদেব বারিকেরা।

পরে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্তবাবু গজানন বস্তিতে পৌঁছলে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে কথা বলার পরে সুকান্তবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। শুনছি, এখানকার এক তৃণমূল নেতা ওই মদ ব্যবসায়ীর সঙ্গে যুক্ত। সেই নেতাকে গ্রেফতারের পাশাপাশি পুলিশের নাকের ডগায় কী ভাবে এত বছর ধরে বেআইনি মদের ঠেক চলছিল, তার তদন্ত করতে হবে।’’

স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক গৌতম চৌধুরী বলেন, ‘‘এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। এই নিয়ে বিজেপির মতো দল কী দাবি করল বা কী বলল, তাতে আমাদের কিছু যায়-আসে না। আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকার এই বিষয়ে ঠিকই ব্যবস্থা নেবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement