সিএসসি দফতরের সামনে বিক্ষোভ। ম্যান্ডেভিল্লা গার্ডেনে।—নিজস্ব চিত্র।
বিদ্যুতের বাড়তি বিল ঘিরে বিতর্কে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের রাস্তাই বজায় রাখছে বিরোধী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সংগঠন। পূর্ণ লকডাউনের দিনগুলো বাদ দিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি সাজাচ্ছে তারা। এরই মধ্যে সিপিএমের হুঁশিয়ারি, বিভ্রান্তি কাটিয়ে সিইএসসি যথাযথ বিল দেওয়ার ব্যবস্থা না করলে তারা মানুষকে বিদ্যুৎ বিল বয়কটের ডাক দিতে বাধ্য হবে।
কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট ও সহযোগী বাম দলগুলি কাল, শুক্রবার মোমিনপুরে সিইএসসি দফতর অভিযানের ডাক দিয়েছে। মোমিনপুর মোড় থেকে তারা মিছিল করবে বলে পুলিশকে জানিয়েছে। বিভিন্ন রাজ্যের বিদ্যুৎ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের সূত্রে পাওয়া তথ্য দেখিয়ে বুধবার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে কলকাতার বাম নেতৃত্ব দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্রের এমএসইডিসিএল ছাড়া বাকি সব সংস্থার ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের দাম সিইএসসি-র চেয়ে কম। সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার এ দিন বলেন, ‘‘নানা রকম ব্যাখ্যা ভাসিয়ে দিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করা হচ্ছে। আমরা এখনও বিদ্যুতের বিল বয়কটের ডাক দিইনি। কিন্তু যে ভাবে বিল আসছে, বহু নিম্নবিত্ত পরিবারের পক্ষেই তা দেওয়া সম্ভব নয়। লকডাউন-পর্বে তো আরওই সমস্যা। সিইএসসি দফতরে গিয়ে শুক্রবার আমরা বলে আসব, অবস্থার পরিবর্তন না হলে বিল বয়কটের ডাক দিতে বাধ্য হব!’’ কল্লোলবাবুদের দাবি, বিদ্যুতের মাসুল আগেও বাড়ত। কিন্তু ২০১১ সালের পর থেকে বৃদ্ধির হার লাগামছাড়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান দাবি জানিয়েছেন, ভূতুড়ে বিলের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া বন্ধ করে মানুষকে সুরাহা দিতে সিইএসসি-কে নির্দেশ দিক রাজ্য সরকার। যাঁদের বিদ্যুৎ খরচ ২০০ ইউনিটের মধ্যে, লকডাউনে তাঁদের বিল মকুব করার দাবিও করেছেন তিনি। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘হাওড়ায় বিদ্যুৎ নিয়ে বিক্ষোভে পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। এ ভাবে জোর করে সমস্যা মিটবে না। বিদ্যুৎ বা আমপান-এর ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে মানুষ প্রতিবাদ করবেনই।’’
দক্ষিণ কলকাতা জেলা কংগ্রেস ও প্রতিবাদী মঞ্চের উদ্যোগে এ দিনই ম্যান্ডেভিলা গার্ডেনের সিইএসসি দফতরের বাইরে বিক্ষোভ হয়েছে। তাদের দাবি, মার্চ মাসের শেষ রিডিং এবং জুন মাসের রিডিং নিয়ে তুলনা করে সেই ইউনিটকে তিন ভাগে ভেঙে বিল দিতে হবে। প্রসেনজিৎ বসুদের ‘বিদ্যুৎ মাসুল বৃদ্ধি নাগরিক মঞ্চ’ও কাল ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে নাগরিক বিক্ষোভ ও গণ-শুনানির ডাক দিয়েছে।