আন্দোলনের নামে সরকারি অফিসে আগুন ধরানোর ঘটনার যেন বিরাম নেই। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে পাহাড়ে লামাহাটায় পঞ্চায়েত অফিস ও কার্শিয়াঙের ডাওহিলে বন দফতরের অফিস পোড়ানোর চেষ্টা হয়েছে। দমকলের তৎপরতায় আগুন আয়ত্তে এলেও নিত্য অশান্তি নিয়ে বাসিন্দাদের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। তা নিয়ে অস্বস্তি বাড়ছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অন্দরেও।
যদিও মোর্চার দাবি, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আগুন লাগিয়ে তাদের ভাবমূর্তি খারাপ করার চেষ্টা হচ্ছে। তা হলে মোর্চা কেন বিবৃতি দিয়ে অশান্তিতে যুক্তদের গ্রেফতার করার কথা বলছে না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। মোর্চা সূত্রে জানা গিয়েছে, নানা মহলে ক্ষোভ-বিরক্তির বহর বেড়ে যাওয়ায় দলের শীর্ষ নেতাদের কয়েক জন সব শাখা অফিসকে সতর্ক করেছেন। মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির এক নেতা জানান, বন্ধ চালিয়ে যাওয়ার সঙ্গে অনশনও শুরু করে সরকারের উপরে চাপ বাড়ানো হবে। সেই কারণে কোনও সংঘাতের রাস্তায় যেতে কাউকে নিষেধ করেছেন মোর্চার কয়েক জন নেতা। পাহাড়ের বিশিষ্টদের কয়েক জনও আন্দোলনের রাশ যাতে হাতের বাইরে না যায়, সে দিকে খেয়াল রাখতে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গকে অনুরোধ করেছেন। অনির্দিষ্টকাল বন্ধ যে অসম্ভব, তা-ও কয়েক জন প্রবীণ পাহাড়বাসী মনে করিয়ে দিয়েছেন।
আজ, শুক্রবার ম্যাল চৌরাস্তায় মোর্চার যুব সংগঠন অনশনে বসতে চলেছে। ম্যালের মঞ্চেই অনশনে বসার কথা দলের যুব সংগঠনের বাছাই কয়েক জনের। মোর্চা নেতাদের আশা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পরে এ বার কেন্দ্রের পক্ষ থেকে দার্জিলিং নিয়ে আলোচনার রাস্তা খুলতে পারে। এ দিনই সেনাও সরানো হয়েছে দার্জিলিং থেকে।
বিরক্তি চরমে পৌঁছেছে বলে খবর পেয়েছেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও। তিনি বলেন, ‘‘যত অপচেষ্টাই হোক পাহাড়-সমতলের অধিকাংশ বাসিন্দা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান চান। তাই শুভবুদ্ধিসম্পন্ন সকলেই বিরক্ত এবং ক্ষুব্ধ। তাই আবারও বলছি, বন্ধ প্রত্যাহার করে মোর্চা নেতারা আলোচনার পথে আসুন।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘এটা রাজ্যের ব্যাপার। তাই রাজ্যকে এড়িয়ে কেন্দ্রের পক্ষে কিছু করা সাংবিধানিক ভাবে সম্ভব নয়।’’