বেতন না পেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতিকে চিঠি বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের। নিজস্ব চিত্র।
নির্ধারিত সময়ের পরেও বেতন ও পেনশনের টাকা না মেলায় এবার প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির শরণাপন্ন হল বিশ্বভারতীর শিক্ষক সংগঠন ভিবিইউএফএ। যদিও মাসের ৮ তারিখ হলেও এখনও বেতন না মেলা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যাখ্যা দেয়নি বলে অভিযোগ।
বেতন না পাওয়া ও অন্যান্য কিছু আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত অভিযোগ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী তথা বিশ্বভারতীর আচার্য নরেন্দ্র মোদীকে ই-মেল করেছে ভিবিইউএফএ। ই-মেলের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি তথা বিশ্বভারতীর পরিদর্শক রামনাথ কোবিন্দ, রাজ্যপাল তথা বিশ্বভারতীর রেক্টর জগদীপ ধনখড়, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রক সহ আরও বেশকিছু সংশ্লিষ্ট স্থানে। সংগঠনের আশা কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপে এই সমস্যার সমাধান মিলতে পারে।
রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি পাঠানোর ‘অপরাধে’ ভিবিইউএফএ-র দুই শিক্ষককে ইতিমধ্যেই বিশ্বভারতীর তরফে নোটিস দেওয়া হয়েছে। জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন এমন ই-মেল পাঠান হল।
ই-মেলে সংগঠন জানিয়েছে, বিশ্বভারতীর সমস্ত বর্তমান এবং প্রাক্তন কর্মী ও শিক্ষকদের জুন মাসের বেতন বা পেনশন স্বাভাবিক ভবে ৩০ জুনের মধ্যে হওয়ার কথা। কিন্তু ৮ জুলাই পর্যন্ত তা এসে পৌঁছায়নি. এমনকি, এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে কোনও কারণ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিও জারি করা হয়নি বলে সংগঠনের অভিযোগ।
একশ্রেণির কর্মীদের ইচ্ছাকৃত গাফিলতির কারণেই অতিমারি পরিস্থিতিতে এমন একটি ঘটনা ঘটেছে বলে বিশ্বভারতীয় একটি সূত্রের খবর। বহু বয়স্ক পেনশনভোগী নির্দিষ্ট দিনে ব্যাঙ্কে গিয়ে খালি হাতে বাড়ি ফিরে এসেছেন বলেও অভিযোগ। ‘বিশ্বভারতী পেনশনার অ্যাসোসিয়েশন’-এর তরফ থেকেও বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীকে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
গোটা ঘটনার জন্য উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো এবং অ্যাকাউন্টস অফিসারকে দায়ী করা হয়েছে শিক্ষক সংগঠনের তরফে পাঠানো ই-মেলে। প্রোমোশন পাওয়া শিক্ষকদের পাওনা বকেয়া অর্থ না মেটানোর অভিযোগও করা হয়েছে ওই ই-মেলে। গত বছর ফেব্রুয়ারি, জুন ও জুলাই মাসে একই ভাবে বেতন দিতে দেরি হওয়ার ঘটনা ঘটায় কর্তৃপক্ষের কাছে কারণ জানতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ সেই বিষয়ে কোনও জবাব দেননি বলেও অভিযোগ সংগঠনের।
গোটা বিষয়টি সম্পর্কে ভিবিইউএফএ-র বক্তব্য, ‘বেতন বা পেনশন পাওয়া সংবিধানের ২১ নং ধারা অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যখন সেই বিষয়ে কর্ণপাত করতে রাজি নন, তখন সমাধানের আশায় বাধ্য হয়েই আমরা উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে পুরো বিষয়টি জানালাম’। তবে কেন বেতন দিতে এই দেরি, সেই বিষয়ে বিশ্বভারতীর তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।