ছবি এপি।
নির্দিষ্ট দিনেই কেরল হয়ে মূল ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ল বর্ষা। তবে গাঙ্গেয় বঙ্গে সে কবে আসবে এখনই তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না আবহবিদেরা। সৌজন্যে আরব সাগরে তৈরি হতে চলা একটি ঘূর্ণিঝড়। আবহবিজ্ঞানীদের অনেকের মতে, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আপাতত পশ্চিম উপকূলেই আটতে থাকতে পারে বর্ষা। সেই প্রভাব কাটলে সে পূর্ব উপকূলের দিকে সরে আসবে। আপাতত বঙ্গোপসাগরেও তেমন জোরালো কোনও নিম্নচাপের দেখা নেই বলে আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর।
মৌসম ভবন জানিয়েছে, সোমবার কেরলে বর্ষা ঢুকেছে। নির্ঘণ্ট মেনে চললে ১ জুনেই কেরলে বর্ষা হাজির হওয়ার কথা। কিন্তু বহু সময়েই তার আসতে দেরি হয়। এ বারও বর্ষার দেরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছিল মৌসম ভবন। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের চেহারা নিতে চলা গভীর নিম্নচাপের প্রভাবেই বর্ষার নির্ঘণ্ট বদল হয়নি।
আরব সাগরে দানা বাঁধতে চলা এই নতুন ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে নিসর্গ (বাংলাদেশের দেওয়া নাম)। মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামিকাল, বুধবার সন্ধ্যায় সে মহারাষ্ট্রের হরিহরেশ্বর ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দমনের মাঝখান দিয়ে স্থলভূমিতে প্রবেশ করবে।
আরও পড়ুন: ‘করোনা-আতঙ্কের শিকার হল আমার কোভিড-নেগেটিভ ছেলেটা’
এ বার মারাত্মক গরম বঙ্গে দেখা যায়নি। প্রায়শই কালবৈশাখীর ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু তাও বর্ষা আগমন কবে হবে তা নিয়ে মাথাব্যথা রয়েছে। আমপানকবলিত এলাকায় এখনও অনেকে গৃহহীন হয়ে প্লাস্টিকের তাঁবুতে রয়েছে। প্রবল বর্ষা এলে তাঁদেরও বিপদ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, নির্ঘণ্ট অনুযায়ী গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা আসার কথা ১১ জুন। কিন্তু আরব সাগরের ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব না-কাটা পর্যন্ত বর্ষার আগমন নিয়ে নির্দিষ্ট কিছু বলা সম্ভব নয়।
তবে আবহবিদদের অনেকে মনে করছেন, গাঙ্গেয় বঙ্গে বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ, বঙ্গোপসাগরের পরিস্থিতি এখনও প্রাক-বর্ষার অনুকূল নয়। তবে মৌসম ভবনের যা পূর্বাভাস তাতে মনে হচ্ছে, আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব হয়তো দীর্ঘায়িত হবে না।
আরও পড়ুন: শৌচাগার জলের তলায়, রাতের অপেক্ষায় সীতারা
মৌসম ভবন জানিয়েছে, এবার গোটা দেশেই প্রায় সর্বত্র স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে। সব থেকে বেশি বৃষ্টি হতে পারে উত্তর-পশ্চিম ভারতে। সেখানে স্বাভাবিকের থেকে ৭ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হতে পারে। আবহবিজ্ঞানের ভাষায়, স্বাভাবিকের তুলনায় ৪ শতাংশ কম-বেশি বৃষ্টি হলে স্বাভাবিক হিসেবেই গণ্য করা হয়। সেই হিসেবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে এ বার স্বাভাবিকের থেকে ৪ শতাংশ কম বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ সম্ভাবনার বিচারে কোনও মতে ‘স্বাভাবিক’ বর্ষার গোত্রে ঢুকেছে দেশের এই অঞ্চল। তবে আবহবিদদের অনেকের মতে, এখানে অনেকগুলি রাজ্যকে একসঙ্গে গড়ে হিসেব করা হয়েছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের বর্ষা ভাগ্য খারাপ হবেই এটা ধরে নেওয়া এখনই ঠিক হবে না।