আবার ভাসল শহর। বৃষ্টির মধ্যে দুই মেয়েকে কাঁধে নিয়ে রাস্তায়। রবিবার ধর্মতলায়। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
বৃষ্টি তো হয়ে চলেছে নিয়মিতই। কিন্তু ভ্যাপসা গরম কাটছে কই? রবিবার দক্ষিণবঙ্গের একাংশে বৈকালিক ঝড়বৃষ্টির পরে এই প্রশ্ন জোরদার হয়ে উঠেছে। আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা আসন্নপ্রায়। এই পরিস্থিতিতে বাতাসে জলীয় বাষ্প বাড়বেই। তাই চট করে ভ্যাপসা গরম কাটবে না। তবে ঝড়বৃষ্টি হলেও জ্বালা কিছুটা জুড়োতে পারে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানাচ্ছেন, নতুন একটি নিম্নচাপের প্রভাবে ১১-১২ জুন পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঢুকতে পারে।
চলতি গ্রীষ্মে গাঙ্গেয় বঙ্গে নিয়মিত বৃষ্টি হতে থাকায় প্রকৃতিগত লাভ হয়েছে এবং হচ্ছে বলেও মনে করছেন কৃষি-আবহবিদেরা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের কলকাতা বিমানবন্দরের আবহাওয়া দফতরের প্রধান গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘‘গ্রীষ্মে নিয়মিত বৃষ্টি হলে খালবিল জল ভরে যায়। তার ফলে সেচের কাজে ভূগর্ভস্থ জলের উপরে নির্ভরতা কমে। আবার নিয়মিত বৃষ্টির জল মাটি চুইয়ে ভিতরে ঢুকে ভূগর্ভের জলের ভাঁড়ারের ঘাটতিও পূরণ করে। তবে এটাও ঠিক যে, ঝড়বৃষ্টিতে প্রাণহানি এবং বিভিন্ন শস্যের ক্ষতি হয়।’’
এক কৃষি-আবহবিদের বক্তব্য, একসঙ্গে হুড়মুড় করে অতিবৃষ্টি হলে কোনও লাভ হয় না। কারণ, মাটির জল শোষণের ক্ষমতা নির্দিষ্ট। এক দিনে অতিবর্ষণ হলে গাণিতিক দিক থেকে হয়তো মাসের শেষে গড় বৃষ্টির পরিমাণ ঠিক হতে পারে। কিন্তু আদতে সেই জল মাটির উপর দিয়ে গড়িয়ে নদীনালা বেয়ে সাগরে চলে যায়। মাটি খুব কম শোষণ করতে পারে।
আরও পড়ুন: বেশি ভয় নিয়েই আজ বেশি কাজে, লকডাউন শিথিল পর্বের দ্বিতীয় দফা শুরু
গ্রীষ্মের বৃষ্টির মধ্যেই মৌসম ভবন আশ্বাস দিয়েছে, বর্ষার অগ্রগতি ফের একটু গতি পেয়েছে। এ দিন তামিলনাড়ু ও অন্ধ্রপ্রদেশের একাংশ হয়ে মৌসুমি বায়ু চলে এসেছে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। তার পরে সাগর থেকে জোলো হাওয়া গাঙ্গেয় বঙ্গে ঢুকছে। রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, গ্রীষ্মের প্রায় শেষ লগ্নে এসে সেই জোলো হাওয়া গরম হয়ে উঠে বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি করছে এবং তার জেরেই ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। এ দিনের বৃষ্টির দাপট এতটাই ছিল যে, কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তের রাস্তা জল জমে নদীর চেহারা নেয়।
আরও পড়ুন: কলকাতা মেডিক্যাল, বাঙুরে বৃদ্ধি পাচ্ছে সুস্থ হওয়ার হার