ফাইল ছবি
তীব্র গরম। তার সঙ্গে মধ্য দিনে বইছে গরম হাওয়া বা লু। মালদহ থেকে কোচবিহার, উত্তরবঙ্গের সব জেলাতেই কমবেশি এমন পরিস্থিতি চলছে কিছু দিন ধরে। প্রাক বর্ষার যে প্রবল বৃষ্টিতে গত মাসেও ভাসছিল কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারের বহু এলাকা বা শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি শহর, তা দ্রুত অতীত হয়ে গিয়েছে। উল্টে এমন গরমে বেশ কিছু ক্ষেত্রে স্কুল পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়ছে বলেও দাবি উঠেছে। বৃহস্পতিবার দিনহাটায় এক কলেজ ছাত্রীর মৃত্যুর পরেও বলা হয়, প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছে সে। যদিও চিকিৎসকদের বক্তব্য, ছাত্রীটির সুগার, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি কোমর্বিডিটি ছিল।
বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত ভাবে গাছ কাটা, নগরায়নের প্রভাবেই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রামীণ মৌসম সেবা কেন্দ্রের নোডাল অফিসার শুভেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ওড়িশা উপকূলের দিকে মৌসুমি অক্ষরেখা সরে গিয়েছে। তাই জলীয় বাষ্প উত্তরবঙ্গে আসতে পারছে না। ফলে উত্তরবঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে না এবং তাপমাত্রা বাড়ছে। তবে শুভেন্দু জানান, মৌসুমি অক্ষরেখা আবার নিজের জায়গায় ফিরতে শুরু করেছে। তাতে দিন দু’য়েকের মধ্যে বৃষ্টি শুরু হবে। ১৯ জুলাই থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এই গরমে নিয়মিত জল খাওয়া, বাড়ি থেকে কম বেরনোর মতো কিছু পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের মতে, এই বিষয়গুলি মাথায় রাখলে নাক দিয়ে রক্তপাতের মতো ঘটনা কম ঘটবে। ডিহাইড্রেশনের আশঙ্কাও কমবে। তবে পড়ুয়াদের এমন পরিস্থিতি থেকে বাঁচাতে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের তরফে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরকে তাপপ্রবাহে কথা জানিয়ে সকালে ক্লাস করানোর অনুমতি চাওয়া হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান লৈক্ষ্যমোহন রায় বলেন, “বেশির ভাগ স্কুলের ক্লাসঘরের মাথার উপরে টিনের চাল। তাতে ছাত্রছাত্রী থেকে শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।” কোচবিহার জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) কানাইলাল দে বলেন, “সকালের দিকে ক্লাস করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে।” দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক উজ্জ্বল আচার্য বলেন, “গরমে বেশি করে জলপান করতে হবে। ছাতা ব্যবহার করতে হবে।’’