নেটমাধ্যমে এ কথাই লিখেছেন তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া।
রাজনীতিতে এসে তিনি ভুল করেছেন। বিধানসভা ভোটে জেতার ঠিক দু’মাসের মাথায় এমনই উপলব্ধি মনোরঞ্জন ব্যাপারীর। হুগলির বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে এ কথা জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি। সত্যিই আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে, রাজনীতিতে এসে আমি বোধহয় ঠিক করিনি।’
মানুষের প্রত্যাশা পূরণের চাপই যে তাঁর কষ্টের কারণ, সে কথাও স্পষ্ট করেছেন মনোরঞ্জন। তাঁর কথায়, ‘এত অভাবী, দুঃখী মানুষ, এত তাদের সমস্যা। তাদের সকল আশা ভরসার কেন্দ্রে এখন এসে দাঁড়িয়ে পড়েছি আমি। আমাকে ঘিরে তাদের অনেক আশা-প্রত্যাশা। যেন আমার কাছে কোন জাদুকাঠি আছে, যা দিয়ে তাদের সব সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারি।’
মনোরঞ্জন লিখেছেন, মানুষ তাঁকে এখন ‘ঈশ্বরের সমতুল শক্তিমান’ বলে মনে করছে। ভাবছে, তাঁর কাছে যা চাওয়া হবে তা-ই মিলবে। এর পরেই তাঁর আক্ষেপ, ‘কিন্তু আমি যে অতি তুচ্ছ নগণ্য একজন মানুষ। খড়, মাটি, রঙের একটা মূর্তি ছাড়া কিছুই নই।’
দু’মাসের জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের কেমন চাহিদার মুখোমুখি তিনি হয়েছেন, সে কথাও জানিয়েছেন তিনি। মনোরঞ্জন লিখেছেন, ‘যে বেকার, সে ভাবছে চাইলেই আমি তাকে একটা চাকরি দিয়ে দিতে পারি। যার ভাঙা ঘর, তাকে দিতে পারি একটা মাথা গোঁজার সুন্দর আবাস। যে অসুস্থ, তাকে দিতে পারি সুচিকিৎসা।’ তৃণমূল বিধায়কের দাবি, ক্ষমতা থাকলে তিনি সকলের সব চোখের জল এক নিমেষে মুছিয়ে দিতে পারতেন। কিন্তু সেই ক্ষমতা তাঁর নেই।
এরপর শুক্রবার সকালে ফের ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক। তাতে লিখেছেন, ‘আমাদের দিদি (মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মানুষের দুঃখ-যন্ত্রণা দূর করতে অনেক মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন, করেছেন, আরও করবেন।’ পাশাপাশি, নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলার মানুষকে বিপদে ফেলার ষড়যন্ত্র চলছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এমন পরিস্থিতির মধ্যেও রাজ্য সরকার সাধ্যমতো মানুষের কাজ করে চলেছে জানিয়ে ‘ইতিবৃত্তে চণ্ডাল জীবন’-এর লেখকের মন্তব্য, ‘তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম। সাগর সমান প্রয়োজনের কাছে যা এক বালতি, এক কলসি।’