নবান্নে সেই ‘অনুপ্রবেশকারী’ হনুমান। ছবি: সংগৃহীত।
মিনিট চল্লিশ নবান্নে কাটালেন তিনি। এলেন, রইলেন কিন্তু সে ভাবে কাউকে বিরক্ত করেননি। কেউ কেউ বিস্কুট ছুড়ে দিয়েছিলেন। যত্ন করে তুলে সেই নিবেদন গ্রহণ করলেন। বন দফতরের কর্মীরা খবর পেয়েই ধরতে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি ধরা দিলেন না। কী ভাবে ১৩ তলায় উঠেছিলেন সে রহস্য জিইয়ে রেখে নিজের থেকে সিঁড়ি দিয়ে নেমে একেবারে এক তলা দিয়ে প্রস্থান।
রাজ্যের মুখ্য সচিবালয় হাওড়ার নবান্নে কর্মী থেকে অতিথি সকলকেই প্রবেশ ও প্রস্থানের সময় (ইন ও আউট টাইম) উল্লেখ করতে হয়। তবে এই অনাহূত অতিথি তিথি না মেনেই এসেছিলেন। অফিস শুরু হওয়ার ঘণ্টা খানেক পরে তাঁর প্রথম দেখা পাওয়া যায়। তখন ঘড়ির কাঁটা ১১টার ঘরে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, সেটাই তাঁর ‘ইন টাইম’। আর এক তলা দিয়ে যখন বেরিয়ে গেলেন তখন বাজে ১১টা ৪০ মিনিট। সব মিলিয়ে হনুমান মিনিট চল্লিশ কাটানোয় কর্মীদের অনেকের বক্তব্য, বৃহস্পতিবার নবান্নে হনুমান ‘চল্লিশা’ হল!
১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রী দফতর। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দফতরে ছিলেন না। তবুও ১৩ তলায় হনুমানের অনুপ্রবেশ ঘটেছে, খবর পেয়ে তৎপরতা বেড়ে যায় নবান্নে। ধরতে হন্যে হয়ে ঘুরেছেন নিরাপত্তা রক্ষীরা। হাজির হন বন দফতরের কর্মীরা। কিন্তু বিফল হন সকলেই। ধরা তিনি দেননি। ৪০ মিনিট ‘নবান্নকাণ্ড’-এর পরে তাড়া খেয়ে নিজেই লাফ দিয়ে বেরিয়ে যান।
একটি ভিডিয়োয় দেখা যায়, নবান্নের বারান্দা দিয়ে লাফাতে লাফাতে এগিয়ে চলেছেন তিনি। আর হাতে ওয়াকিটকি নিয়ে পিছন পিছন যাচ্ছেন এক নিরাপত্তারক্ষী। সে সব যদিও গায়ে মাখেননি তিনি। নির্বিকারেই ঘোরাফেরা করেন। ১৩ তলার বারান্দায় রেলিং ধরে বসে বেশ কয়েক বার উপরের দিকে তাকাতেও দেখা গিয়েছে। খবর ছড়িয়ে পড়তেই কর্মীদের ভিড় বাড়তে থাকে। হনুমানের ছবি, ভিডিয়ো তুলতে হুড়োহুড়ি লেগে যায়। সেই ফাঁকেই কেউ কেউ বিস্কুট ছুঁড়ে। টিফিন পর্ব সারতে সারতেই সিঁড়ি ভাঙতে থাকেন। তবে চলে গেলেও রেশ থেকে যায়। বৃহস্পতিবার নবান্নে হাজার কাজের মাঝে আলোচনার মূল বিষয় ছিল ‘হনুমান-পর্ব’।