Weight Loss Tips

তিন দিন খাবার নয়, শুধু জল খেয়ে ডায়েট! বিনা শ্রমে ওজন কমানোর পন্থা কি লাভদায়ক?

তিন দিন তরল খেয়ে ৪ কেজি ওজন কমানোর পন্থা কি আদৌ ফলপ্রদ? এতে কতটা লাভ হয়, কী বলছেন চিকিৎসক, পুষ্টিবিদেরা?

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:২৫
Share:
ওজন ঝরাতে লম্বা উপোস! আদৌ ভাল কি?

ওজন ঝরাতে লম্বা উপোস! আদৌ ভাল কি? ছবি:ফ্রিপিক।

শরীরচর্চায় আপত্তি অনেকের। কেউ বলবেন, সময় কই? আবার কারও যুক্তি, সারা দিন পরিশ্রমের পর ব্যায়াম করার শক্তি থাকে না। তাই সহজ উপায়ের খোঁজ।

Advertisement

পছন্দের খাবার খেয়ে, বিনা শ্রমে স্বল্প দিনে কয়েক কেজি ওজন ঝরানোর টোটকা এখন ইনস্টাগ্রাম থেকে ইউটিউবে। সম্প্রতি এক নেটাগরিক জানিয়েছেন পরিশ্রম ছাড়া তিন দিনে অন্তত ৪ কেজি ওজন ঝারানোর কৌশল। প্রায় তিন দিন (৬০ ঘণ্টা) ধরে খেতে হবে নানা রকম পানীয়। তাতে কফি, মাচা টি, ইলক্ট্রোলাইট পানীয় থাকতে পারে। তবে কোনও শক্ত খাবার খাওয়া যাবে না। তিন দিন ধরে যথাসম্ভব ধ্যান করতে হবে। শরীরচর্চার দরকার নেই। শুধু দৈনন্দিন কাজের প্রয়োজনে ৭ হাজার পা হাঁটলেই যথেষ্ট। যিনি এই কৌশল বাতলেছেন তাঁর দাবি, তিনি নিজে উপকার পেয়েছেন। ওজন কমেছে, শরীর চনমনে হয়েছে।

৬০ ঘণ্টা কোনও খাবার না খেয়ে শুধু তরল খেয়ে ওজন ঝরানোর এই কৌশল আদৌ কি ফলদায়ক? মুম্বইয়ের এক হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক মঞ্জুষা আগরওয়াল কিন্তু মোটেই এই কৌশল অনুসরণ করার কথা বলছেন না। তিনি বলছেন, ‘‘স্বল্প সময়ের জন্য উপোস উপকারী হলেও, দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে শরীরে খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া তা একেবারেই উচিত নয়। এতে মাথাধরা, ক্লান্তি, শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া, অম্বল, হজমের সমস্যা-সহ একাধিক লক্ষণ দেখা দিতে পারে।’’

Advertisement

চিকিৎসকেরা বলছেন, শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ সুষ্ঠু ভাবে সম্পাদনের জন্য শক্তি, প্রয়োজনীয় পুষ্টির প্রয়োজন। খাবার থেকেই শরীর সে সব সংগ্রহ করে। ফলে ৬০ ঘণ্টা ঠিকমতো খাওয়া না হলে, পুষ্টি ও শক্তির অভাবে বিরূপ প্রভাব পড়বে শরীরে। বিপাকক্রিয়া, রক্তে শর্করার মাত্রারও হেরফের হতে পারে।

মঞ্জুষা জানাচ্ছেন, একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, দীর্ঘ ক্ষণ না খেয়ে থাকলে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কর্মক্ষমতায় এর প্রভাব পড়ে। বিশেষত হার্ট ও কিডনির জন্য তা মোটেই ভাল নয়।

আবার তিন দিন জল বা তরল খেয়ে থাকার পর খিদের চোটে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলা, তিন দিনের ডায়েটের পরে বাকি দিনগুলিতে উচ্চ ক্যালোরি এবং চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কখনও সুস্বাস্থ্যের লক্ষণ হতে পারে না।

যিনি ৩ দিনে ৪ কেজি ওজন কমানোর কৌশল বাতলেছেন, তিনি ১০ দিন পর আবার একই নিয়ম মানবেন। তবে পুষ্টিবিদেরা সতর্ক করছেন, তিন দিন না খেয়ে থেকে কেউ অতিরিক্ত খেলে বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে।

বলিউড অভিনেত্রী করিনা কপূরের ব্যক্তিগত পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকর ইতিপূর্বে সমাজমাধ্যমে দ্রুত ওজন কমানোর ফাঁদে পা না দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলছেন, ‘‘তাড়াহুড়ো করতে গেলেই বিপদ। শুধু ওজন নয়, তার সঙ্গে কমবে ত্বকের জেল্লাও।’’ বরং তিনি ওজন কমানোর ৩ পন্থা বলেছেন। প্রথমত, তাড়াহুড়ো নয়, মেদ ঝরানো দরকার ধীরে। এক বছরে সামগ্রিক ওজনের ৫-১০ শতাংশ কমানো যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, শরীরচর্চা। তবে মেদ গলানোর লক্ষ্যে অতিরিক্ত শ্রম নয়, বাস্তবসম্মত লক্ষ্যমাত্রা রাখার পরামর্শ তাঁর। তৃতীয়ত, কড়া ডায়েট নয়, বরং পুষ্টিকর খাবার পরিমিত খেয়ে ওজন কমানোর পক্ষপাতী তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement