রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ফাইল চিত্র।
পশ্চিমবঙ্গে রেলের প্রকল্পে জমি পাওয়া গেলে টাকা কোনও বাধা হবে না বলে খাস কলকাতায় দাঁড়িয়েই আশ্বাস দিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। নরেন্দ্র মোদী সরকারের আট বছর পূর্তি উপলক্ষে দেশব্যাপী গরিব কল্যাণ সম্মেলনের অঙ্গ হিসেবে মঙ্গলবার বেহালার জেমস লং সরণিতে পূর্ব রেলের অডিটোরিয়ামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রেলমন্ত্রী। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের ‘সাফল্য’ প্রসঙ্গে চলতি বাজেটে বাংলার রেল প্রকল্পে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলেন তিনি। সেই সঙ্গে রাজ্যের সরকারি আধিকারিকদের জমির ব্যবস্থা করতে তৎপর হওয়ার আর্জি জানান। রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘জমির ব্যবস্থা হলে আমরা সব প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাব।’’
এই আশ্বাসের অন্তরালে বল বাংলার কোর্টে ঠেলে দেওয়া হয়েছে বলেই রাজনৈতিক-প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অভিমত। পশ্চিমবঙ্গে চালু রেল প্রকল্পগুলির মধ্যে প্রায় ৫৭ শতাংশের কাজ বাকি। বেশির ভাগ প্রকল্পের কাজ আটকে থাকার কারণ হিসেবে সময়মতো জমি না-পাওয়ার কথা তুলে রেল বার বার রাজ্য সরকারকেই দায়ী করেছে। রেল মন্ত্রক সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে নতুন লাইন তৈরি, ডাবল লাইন নির্মাণ, গেজ বদল মিলিয়ে প্রায় ৪৪২১ কিলোমিটার দীর্ঘ পথে রেল প্রকল্প চালু রয়েছে। কিন্তু জমিজটে আড়াই হাজার কিলোমিটারের বেশি অংশের কাজ বাকি। বেশ কিছু প্রকল্পে নতুন লাইন নির্মাণের কাজ শুরু করেও থামিয়ে দিতে হয়েছে। শহরের মেট্রো প্রকল্পগুলির কাজও জমিজটে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে বারংবার। পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এই পরিস্থিতিতে খোদ রেলমন্ত্রীও বার্তা দিলেন, বঙ্গে প্রকল্প রূপায়ণে তাঁদের তরফে টাকার অভাব নেই। সমস্যা যা কিছু, তা জমি নিয়েই।
এ দিনের অনুষ্ঠানে কৃষকদের সঙ্গে মত বিনিময় পর্বে রাজ্যে রেফ্রিজারেশনের সুবিধাযুক্ত কিষান রেল চালুর দাবি জানান এক চিংড়ি উৎপাদক। তিনি বলেন, উপযুক্ত পরিকাঠামো-যুক্ত ট্রেনের অভাবে পচনশীল পণ্য বাইরে পাঠানো যাচ্ছে না। অনুষ্ঠানের শেষে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘রেফ্রিজারেশনের সুবিধা-যুক্ত কিষান রেল চালুর বিষয়ে রেল দু’মাসের মধ্যে সমীক্ষা করবে। সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গে এর আগে দু’দফায় কিষান রেল চালু হলেও পণ্যের অভাবে তা বেশি দিন চালানো যায়নি। সেই সব ট্রেনে পচনশীল পণ্য বহনের মতো প্রযুক্তি ছিল না। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুম্বই থেকে সাঁতরাগাছি এবং পূর্ব রেলের আরামবাগ থেকে অসমের ডিব্রুগড় পর্যন্ত কিষান রেল পরিষেবা চালু হলেও তেমন সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। পূর্ব রেল আলু, চাল, ফল-সহ নানান কৃষিপণ্য উত্তর-পূর্ব ভারতে পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হলেও তা রূপায়ণ করা যায়নিবলে অভিযোগ।