সুপ্রিম কোর্টে মলয় ঘটক। —ফাইল চিত্র।
কলকাতা হাইকোর্টে নারদ মামলার শুনানি চলাকালীনই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিহবিআই)-এর দায়ের করা মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানালেন তিনি। বাংলায় নারদ মামলার নিরপেক্ষ তদন্তের পরিবেশ নেই বলে দাবি করে নারদ মামলাকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যেতে হাইকোর্টে লিখিত হলফনামা দায়ের করেছিল সিবিআই। তাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল সাসংদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মলয়কে তিনটি পক্ষ করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। তা থেকেই নাম বাদ দেওয়ার আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতে গেলেন মলয়।
নারদ মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী ও নেতাদের শুনানি চলাকালীন নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গিয়েছে বলে মমতা ও মলয়ের হলফনামা গ্রহণ করেনি আদালত। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই শুক্রবার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন মলয়। সেখানেই মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দেওয়ার আর্জি জানান।
১৭ মে রাজ্যের দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র এবং কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করে সিবিআই। নিজাম প্যালেসে তাঁদের নিয়ে যাওয়ার পরই সেখানে হাজির হন মমতা স্বয়ং। তাঁকেও গ্রেফতার করতে হবে বলে দাবি জানান। পরে সেখানে পৌঁছন কল্যাণ এবং মলয়ও। সিবিআইয়ের অভিযোগ, নিজাম প্যালেসে মুখ্যমন্ত্রী নিজে ধরনায় বসেন। অভিযুক্তদের আদালতে নিয়ে যাওয়ায় বাধা দেন। কল্যাণ এবং মলয় সমর্থকদের জড়ো করে পরিস্থিতি তাতিয়ে তোলেন। সন্ত্রস্ত করে তোলেন নিজাম প্যালেসের পরিবেশ। মামলায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।
তবে নারদ মামলায় মুখ্যমন্ত্রী, কল্যাণ এবং মলয়কে জড়িয়ে দেওয়ায় সিবিআইয়ের তীব্র নিন্দা করেন রাজ্যের বার কাউন্সিলের সদস্যরা। লিখিত বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, ‘অভিযুক্ত তিন জনের নামই বার কাউন্সিলের আইনজীবী হিসেবে নথিভুক্ত রয়েছে। অসাংবিধানিক ভাবে নারদ মামলা এঁদের নাম জড়াচ্ছে সিবিআই। এটা শুধু দেশের আইনের পরিপন্থীই নয়, আইনজীবীদের মান-সম্মান ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।’ শুধু তাই নয়, বিরোধীপক্ষকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে, রাতের অন্ধকারে এজলাস বসিয়ে আদালত একতরফা রায় দিয়েছে বলেও অভিযোগ তোলে বার কাউন্সিল।
এর আগেও একবার নারদকাণ্ডের মূল মামলাটিকে স্থানান্তরিত করতে চেয়েছিল সিবিআই। সেই সনয় হাইকোর্টে পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ গঠিত হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টেও বিষয়টি নিয়ে আবেদন জানিয়েছিল সিবিআই। যদিও সেই সময় খালি হাতেই ফিরতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের।