যুযুধান: কোচবিহারে সিপিএমের জনসভায় সাংসদ মহম্মদ সেলিম। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে তৃণমূলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ তুলে, তাঁদের ভারতী ঘোষের পরিণতি দেখার পরামর্শ দিলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম। শনিবার কোচবিহারের পুরাতন পোস্ট অফিস পাড়ার মাঠে দলের জেলা সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখেন তিনি।
এই সবায় তৃণমূল ও বিজেপিকে একসঙ্গে নিশানা করেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। পঞ্চায়েত ভোটের কথা মাথায় রেখের দু’ দলের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ের ডাক দিয়েছেন তাঁরা। পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন দলীয় নেতৃত্ব। ওই প্রসঙ্গেই জঙ্গল মহলের দায়িত্বে থাকা পদত্যাগী আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষের প্রসঙ্গ টেনে সেলিম বলেন, “যে পুলিশ উর্দি পরে তৃণমূলের কাজ করছে তাকে বলি ভারতী ঘোষকে দেখো। দালালি করার একটা সীমা আছে, কতদূর পর্যন্ত যেতে পারবে? তুমি তো ছাপোষা কনস্টেবল আর আইসি, তোমার আইপিএস অফিসার এসপিও যখন বুঝতে পারছে তৃণমূলের হাওয়া খারাপ, আর দিদির নেকনজরে নেই তখন তাঁকেও চাকরি ছাড়তে হচ্ছে।” ওই প্রসঙ্গেই তাঁর কটাক্ষ, পুলিশের কোন দল নেই। বিজেপি, তৃণমূল এক।
একই সঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূল দুই দলের বিরুদ্ধেই লড়াইয়ের ডাক দেন তিনি। সেলিম বলেন, “মোদি, মমতা একই পাঠশালার লোক। তৃণমূল, বিজেপি দুই দলের বিরুদ্ধেই লড়াই করতে হবে। এ জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।” তৃণমূলের বিরুদ্ধে রাজ্যে সন্ত্রাসের ও বিজেপির বিরুদ্ধে দেশ লুঠের অভিযোগ করেন তিনি। সংখ্যালঘুদের উন্নয়নও রাজ্যে ব্যাহত হচ্ছে বলে তোপ দেগেছেন সেলিম।
ওই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই দুই দলের কড়া সমালোচনা করেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য সুজন চক্রবর্তীও। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘ছিটমহলের বাসিন্দাদের জন্য বরাদ্দ টাকা লুঠ হয়েছে। এক দেড় লক্ষ টাকা যে জমির দাম তা বেশি দামে কেনা হয়েছে।’’
অন্যদের মধ্যে সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায়, প্রাক্তন মন্ত্রী অনন্ত রায়, সিপিএমের জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য তমসের আলি প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘তীব্র শীতের মধ্যেও ভাল জমায়েত হয়েছে। এটা দলের ঘুরে দাঁড়াবার ইঙ্গিত।’’ যদিও বিরোধীদের যুক্তি, যে মাঠে ওই সভা হয়েছে তা অনেকটাই ছোট। তার ওপর খানিকটা অংশ ফাঁকাই ছিল। তারিণীবাবু অবশ্য বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানিয়েদেন, বইমেলার জন্য রাসমেলার মাঠে সভা করার অনুমতি মেলেনি। লাগোয়া সার্কাসের মাঠেও অনুমতি দেওয়া হয়নি।