Matua Dharma Maha Mela

মতুয়া ধর্ম মহামেলায় আনাগোনা নেতাদের

তৃণমূল কংগ্রেসের একগুচ্ছ নেতা-মন্ত্রী গিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের ধর্ম মহামেলায়। গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র  

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ০৪:৪৭
Share:
মতুয়া ধর্ম মহামেলা।

মতুয়া ধর্ম মহামেলা। —ফাইল চিত্র।

মতুয়াদের ধর্ম মহামেলা ঘিরে প্রতি বছর বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর ভিড় চোখে পড়ে। কে কত ‘মতুয়া-ঘনিষ্ঠ,’ তা প্রমাণের জন্য চলে ‘অলিখিত রেষারেষি।’ হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার মতুয়াদের শুভেচ্ছাবার্তা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের একগুচ্ছ নেতা-মন্ত্রী গিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের ধর্ম মহামেলায়। গিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি তথা তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতা ঠাকুরের পা ছুঁয়ে প্রণাম করে বুধবার বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপির হরিণঘাটার বিধায়ক অসীম সরকার। শুভেন্দু এ দিন অসীমকে পাশে বসিয়ে বলেছেন, ‘‘উনি (মমতা ঠাকুর) তো ঠাকুরবাড়ির মা। অসীমবাবু ঠিকই করেছেন।’’ আবার অসীম আর এক মতুয়া মহাসঙঘের সঙ্ঘাধিপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী, বিজেপির শান্তনু ঠাকুরকে জড়িয়েও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘এক্স’ হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘‘শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি। সেবা ও আধ্যাত্মিকতার উপরে জোর দেওয়ার জন্য তিনি অগণিত মানুষের হৃদয়ে বেঁচে আছেন। পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরনগর এবং বাংলাদেশের ওড়াকান্দিতে (হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মস্থান) ভ্রমণ আমি কখনও ভুলব না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমাদের সরকার মতুয়া সম্প্রদায়ের কল্যাণের জন্য অনেক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং আগামী দিনেও তাঁদের কল্যাণের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাব।’’ মুখ্যমন্ত্রী তাঁর শুভেচ্ছা-বার্তায় লিখেছেন, ‘‘জয় হরিবোল, জয় হরিচাঁদ, জয় গুরুচাঁদ। শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মদিবস উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ তথা সমগ্র বিশ্বের সাধু, গোঁসাই, পাগল, দলপতি, মতুয়াভক্তবৃন্দ নির্বিশেষে সকলকে জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম, শুভেচ্ছা ও ভালবাসা।’’

বিধানসভা ভোট যত কাছে আসবে, মতুয়া-সহ নানা ধর্মস্থানে শাসক ও বিরোধী নেতাদের আনাগোনাও বাড়বে। ঠাকুরবাড়িতে বুধবার গিয়েছিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, ব্যারাকপুরের সাংসদ পার্থ ভৌমিক। তার পরে এ দিন গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী। সকলেই প্রথামাফিক মন্দিরে প্রণাম সেরে ফিরেছেন। কেউ কেউ দেখা করেন মমতা ঠাকুরের সঙ্গে। সরাসরি রাজনীতি নিয়ে কথা কেউই বলেননি। সকালে শুভেন্দু দলের জনা পনেরো বিধায়ককে নিয়ে ঠাকুরনগরে পৌঁছন। হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে প্রণাম সেরে দেখা করেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি শান্তনুর সঙ্গে।

Advertisement

শুভেন্দু বলেন, ‘‘পাঁচ বারের বেশি মতুয়া ঠাকুরবাড়িতে এসেছি। তবে এমন পুণ্যদিনে এই প্রথম এলাম। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে ঠাকুরবাড়ির সব সদস্যকে আমার প্রণাম।’’ তাঁর কথায়, ‘‘ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করলাম, বাংলাদেশের মতুয়া হিন্দুরা ভাল থাকুক। তাড়াতাড়ি চিন্ময়কৃষ্ণ প্রভুর মুক্তি দাও। জেহাদিদের হাত থেকে ঠাকুর আমাদের মুক্তি দিন।’’

রাজনীতির প্রসঙ্গ অবশ্য একেবারে এড়াননি বিরোধী দলনেতা। তৃণমূল সম্পর্কে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘ওটা রাজনৈতিক দল নয়, ওটা মুসলিম লিগ-টু! হরিচাঁদ ও গুরুচাঁদ ঠাকুর না থাকলে, কয়েক লক্ষ মানুষকে মুসলিম ধর্ম নিতে হত।’’ তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসের পাল্টা কটাক্ষ, ‘‘ঠাকুরবাড়ির পুণ্যভূমিতে দাঁড়িয়ে অশোভন কথাবার্তা বলাটা শুভেন্দুর পক্ষেই সম্ভব!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement