ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে রেশন দোকানগুলিকে। — ফাইল চিত্র।
ভোটের প্রচারে ব্যবহার করা হচ্ছে রেশন দোকানগুলিকে। এমনটাই অভিযোগ করল দেশের রেশন ডিলারদের একাংশ। জুন মাসে কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের অধীন ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (এফসিআই) একটি নির্দেশিকা জারি করে। যে নির্দেশিকায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা (পিএমজিকেএওয়াই) প্রকল্পের প্রচার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে টিনের প্লেটে প্রকল্পের নাম লাগিয়ে তা রেশনের দোকানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু রেশন ডিলারদের একাংশের দাবি, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ছবি লাগিয়ে প্রচার করতে হবে বলা হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মাধ্যম থেকে। যদিও খাদ্য মন্ত্রকের একটি সূত্রের দাবি, কোনও ভাবেই ওই নির্দেশিকায় প্রধানমন্ত্রী ছবি ব্যবহার করার কথা উল্লেখ করা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে হুগলির বিজেপি সাংসদ তথা সংসদের খাদ্য ও বণ্টন মন্ত্রকের স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপার্সন লকেট চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কোভিডের পর থেকে ৮০ কোটি মানুষকে বিনামূল্যে কেন্দ্রীয় সরকার খাদ্যশস্য দিচ্ছে। এ রাজ্যের মানুষের জানা উচিত কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের মানুষকে কী কী পরিষেবা দিচ্ছে। আর আমরা তো পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন রেশন দোকানে গিয়ে দেখি রাজ্য সরকারের খাদ্যসাথীর লোগো লাগানো বোর্ড ব্যবহার করে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ পিএমজিকেএওয়াই প্রকল্পে দেওয়া খাদ্যশস্য পুরোটাই কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হয়। তাই এ ক্ষেত্রে জনগণকে জানাতে প্রকল্পের নাম দিয়ে প্রচার করতে বলা হয়েছে।’’
দেশের রেশন ডিলারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশন কেন্দ্রের এমন নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, ‘‘২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের জন্য এই প্রচার করা হচ্ছে। ভোটের প্রচার কৌশল হিসেবে রেশন দোকানগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে। যদি প্রচার করতে হয়, দেশের মানুষকে এই প্রকল্পের প্রকৃত সুবিধা দিয়ে প্রচার করা হোক।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পিএমজিকেএওয়াই খাতে ৫ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। জানুয়ারি মাস থেকে প্রধানমন্ত্রীর স্কিমের ৫ কেজি শস্য মূল রেশন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা খাতে যে ৫ কেজি খাদ্যশস্য দেওয়া চালু ছিল, সেই বিষয়টি বন্ধ করে দেওয়া হল। কেন্দ্রীয় সরকারের খাদ্য ও বণ্টন বিভাগের অধীন এফসিআইয়ের ম্যানেজিং ডিরেক্টর নির্দেশিকা জারি করেছেন যে, প্রধানমন্ত্রীর স্কিমের প্লেট লাগিয়ে প্রচার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর ছবি লাগিয়ে বিনামূল্যে যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হচ্ছে, তা প্রচার করতে হবে। আসলে এ ভাবে প্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার।’’ তবে নির্দেশিকা প্রসঙ্গে কেন্দ্রের বক্তব্য, ওই নির্দেশিকায় কোথাও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার করতে বলা হয়নি। নির্দেশিকার ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া কেন্দ্রের প্রকল্পটি চালু করতে রেশন ডিলারদের এই সংগঠনটি জুন-জুলাই মাস জুড়ে গণস্বাক্ষর অভিযান চালাবে বলে জানানো হয়েছে। পিএমজিকেএওয়াই প্রকল্পের অধীনে যে ৫ কেজি খাদ্যসামগ্রী দেওয়া বন্ধ হয়েছে, তা পুনরায় চালু করতেই এই গণস্বাক্ষর অভিযান শুরু হয়েছে।