উপলক্ষ: বিজেপি বিধায়কদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ক্যামেরাবন্দি করতে ব্যস্ত দার্জিলিঙের বিধায়ক নীরজ জিম্বা। নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিপর্যয়ের পরে প্রথম বঙ্গভঙ্গের দাবিতে সামনে আনেন বিজেপির সাংসদ জন বার্লা। এ দিন দলের উত্তরবঙ্গের পঁচিশ জন বিধায়ককে নিয়ে (তিরিশ জনের মধ্যে পাঁচ জন অনুপস্থিত ছিলেন) প্রথম ‘বিধায়ক সম্মেলন’ করে বিজেপি। দল সূত্রে খবর, সেখানে উঠে এল আলাদা রাজ্যের দাবি। বৈঠকের পরে দলের অন্যতম জাতীয় মুখপাত্র রাজু বিস্তা বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের মানুষকে বঞ্চনা করা হয়েছে। সেই ভিত্তিতে আলাদা রাজ্য হওয়া প্রয়োজন। এটা মানুষের বক্তব্য। যখন মানুষের দাবি জোরদার হবে, সেই দাবিকে সমর্থন জানিয়ে সংসদে তুলে ধরব।’’ তবে দাবি আর কতটা জোরদার হবে বা কী ভাবে, সেই ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু বলেননি রাজু।
বিজেপির একাংশের বক্তব্য, উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় ভাল ফল করায় বঙ্গভঙ্গের দাবি তুলেছেন বার্লা। কিন্তু দক্ষিণের নেতারা প্রকাশ্যে বরাবরই এই দাবির বিরোধিতা করছেন। সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় থেকে বিজেপির রাজ্য নেতা সায়ন্তন বসু একাধিকবার আপত্তি জানিয়েছেন। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও একই কথা বলেছেন। তবে সম্প্রতি বার্লার পাশে বসে তিনি প্রকারান্তরে এই দাবির প্রতি সহানুভূতি জানান। যদিও বার্লার সঙ্গ ছাড়ার পরেই নিজের পুরনো অবস্থানে ফিরে আসেন।
বিজেপি সূত্রের খবর, এ দিনের সম্মেলনে প্রত্যেক বিধায়কের কাছে জানতে চাওয়া হয়, উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা নিয়ে তাঁর কী মত? দল সূত্রে বলা হয়েছে, প্রত্যেক বিধায়কই রাজ্য সরকারের ‘বঞ্চনা’ এবং মানুষকে ‘বঞ্চিত করার’ অভিযোগ তুলে সরব হন। মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ যেমন বলেন, ‘‘একমাত্র আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হলেই উত্তরবঙ্গের বঞ্চনা ঘুচবে।’’ নাটাবাড়ির বিধায়ক মিহির গোস্বামী বলেন, ‘‘উত্তরবঙ্গের মানুষ যদি আলাদা রাজ্যের দাবি তোলে, আমরা তো তার বাইরে থাকতে পারি না।’’ একই কথা বলেন দার্জিলিঙের বিধায়ক নীরজ জিম্বা।
দলের অন্দরের খবর, উত্তরবঙ্গে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার আগে দলের বিধায়কদের মত সবিস্তার জেনে নিচ্ছেন রাজ্য নেতৃত্ব।
তৃণমূলের তরফে বলা হয়েছে, বাংলাকে ভাগ করতে চাইছে বিজেপি, সেটা এ দিন স্পষ্ট হয়ে গেল। দলের উত্তরবঙ্গের অন্যতম নেতা গৌতম দেব বলেন, ‘‘আমরা রাস্তায় নেমে এই অপচেষ্টা রুখব।’’