বহাল রইল অর্জুন সিংহ ও সোমনাথ শ্যামের দ্বন্দ্ব। বৈঠক না করেই ফিরতে হল সুব্রত বক্সীকে। ফাইল চিত্র।
ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহ ও জগদ্দলের বিধায়ক সোমনাথ শ্যামের দ্বন্দ্ব মেটাতে কলকাতা থেকে নৈহাটি গিয়েছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। কিন্তু সেই বৈঠকে এলেনই না বিধায়ক সোমনাথ। অর্জুন ছিলেন। নৈহাটি পুরসভায় অপেক্ষায় ছিলেন বক্সীও। কিন্তু সোমনাথ না আসায় বৈঠক না করেই কলকাতায় ফিরতে হল বক্সীকে।
রাজ্য সভাপতির বৈঠকে কেন গেলেন না তিনি? সোমনাথের জবাব, ‘‘এমন কোনও বৈঠকের কথা আমার জানা ছিল না। কোনও বৈঠকে আমাকে ডাকা হয়নি। আমি যাইনি, এমনটা বলা উচিত নয়।’’ তিনি জানান, বিকেল থেকে তিনি নিজের বিধানসভা এলাকার নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে ছিলেন।
সাংসদ অর্জুনের সঙ্গে সোমনাথের দ্বন্দ্ব গত কয়েক দিনে সপ্তমে উঠেছে। প্রতিদিনই পালা করে একে অন্যকে আক্রমণ করছেন। যদিও, দিন কয়েক আগে বক্সীই অর্জুনকে ফোন করে চুপ করতে বলেছিলেন। তার পর অবশ্য তেমন বাক্যুদ্ধ চোখে পড়েনি। তবে দ্বন্দ্ব মেটাতে শনিবার নৈহাটি গিয়েছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি। লক্ষ্য ছিল, সাংসদ অর্জুন ও বিধায়ক সোমনাথকে মুখোমুখি বসিয়ে যাবতীয় বিরোধ মিটিয়ে দেওয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই বৈঠকই হল না। কলকাতা থেকে বক্সীর নৈহাটি যাওয়াই সার হল।
এই বৈঠক নিয়ে ব্যারাকপুরের তথা উত্তর ২৪ পরগনার রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল ছিল। বক্সী নৈহাটি যাওয়ার পথেই সাংসদ অর্জুনের সঙ্গে সাক্ষাত হয়ে যায় রাস্তায়। তাঁকে নিয়েই নৈহাটি পৌঁছন বক্সী। ব্যারাকপুর তৃণমূলের একাংশের দাবি, নৈহাটি পুরসভায় বিকেল পাঁচটায় বৈঠকের সময় নির্ধারিত হয়েছিল। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই নৈহাটি পৌঁছে যান বক্সী-অর্জুন। নৈহাটি পুরসভা সূত্রে খবর, প্রায় এক ঘণ্টা ১৫ মিনিট দুই নেতা বৈঠকের জন্য নির্ধারিত ঘরে বসেছিলেন। কিন্তু দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর বিধায়ক সোমনাথ না আসায় দু’জনেই নৈহাটি পুরসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে ব্যারাকপুর লোকসভায় জিতেছিলেন অর্জুন। ২০২২ সালের মে মাসে বিজেপি ছেড়ে অর্জুন তৃণমূলে ফেরার পর থেকেই জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথের সঙ্গে তাঁর বিবাদ চলে আসছে। সম্প্রতি সেই বিবাদ চরমে ওঠে এক তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনায়। গত ২১ নভেম্বর ভিকি যাদব নামে এক তৃণমূল কর্মী খুন হন ভাটপাড়ায়। বিধায়ক সোমনাথ অভিযোগ করেন, খুনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন। সেই সময় দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন দমদম ব্যারাকপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা বিধায়ক তাপস রায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিবৃতি পাল্টা বিবৃতির লড়াইয়ে ঘোরাল হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। এর মধ্যে আবার ওই খুনের মামলায় অর্জুনের ভাইপো পাপ্পুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তৃণমূল সূত্রে খবর, জেলা তৃণমূল সভাপতি তাপস ব্যারাকপুরের রাজনৈতিক অর্ন্তদ্বন্দ্বে শীর্ষ নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে বলেন। তার পরেই ময়দানে নামেন বক্সী।