প্রতীকী ছবি।
দলগত ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যও। হুগলি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের ‘অনৈক্য’ সম্প্রতি সামনে আসায় শীর্ষ নেতৃত্ব কোর কমিটি গড়ে দিয়েছেন। সেই কমিটি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জেলায় বিজেপিকে রুখতে ঐক্যবদ্ধ ভাবে ঝাঁপানোর কথা বলেছে। কিন্তু রবিবারই হরিপালে দলের ব্লক সম্মেলনে জেলা পরিষদের দুই সদস্য গরহাজির থেকেছেন। তাঁরা ডাক পাননি বলে অভিযোগ। একই দিনে পাশের সিঙ্গুর ব্লকেও দলের কর্মী সম্মেলন হয়। সেখানেই দলগত ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু।
২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিঙ্গুরের তিন পঞ্চায়েতে বিজেপির সমর্থনে বোর্ড গড়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। প্রসঙ্গত, ওই নির্বাচনে টিকিট পাওয়া নিয়ে রবীন্দ্রনাথবাবুর গোষ্ঠীর সঙ্গে পাশের বিধানসভা কেন্দ্র হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না গোষ্ঠীর টানাপড়েন চলেছিল অনেকদিন। নির্বাচনের পরে সিঙ্গুর-২ পঞ্চায়েতে প্রধান হন নির্দল প্রার্থী। তিনি বেচারাম ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। এ ছাড়া, মির্জাপুর-বাঁকিপুর এবং বারুইপাড়া-পলতাগড়— এই দুই পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধানও বেচারাম ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
রবিবার সিঙ্গুরের ঘনশ্যামপুরের কর্মী সম্মেলনে ওই তিন পঞ্চায়েতের বোর্ড গড়া নিয়েই প্রশ্ন তোলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে মাঠে-ঘাটে লড়ছি। কিন্তু সিঙ্গুরে কী হচ্ছে? বলতে খুবই রাগ আর লজ্জা হচ্ছে। এখানে বিজেপির সমর্থনে আমরা তিনটি পঞ্চায়েতে বোর্ড গড়েছি। এটা হয় কী করে? জেলার নেতারা বিজেপিকে হারাতে মঞ্চে এক হওয়ার সঙ্কল্প করছেন। প্রচারও করছেন। ওইসব প্রচারে বিশ্বাস বা আস্থা কোনওটাই রাখতে পারছি না। যাঁরা মুখে ঐক্যের কথা বলছেন, তাঁরাই কিন্তু বিজেপি-সিপিএমের সঙ্গে মিলেমিশে তাদেরই মনোনীত লোককে প্রধান করে দিলেন। এই সব খেলা সর্বত্রই চলছে।’’
অতীতের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও তোলেন বর্ষীয়ান বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নেতারা যে খেলা খেলছি, তা ঐক্যের নয়। গত বারে প্রার্থী হওয়ায় আমার খড়ের মূর্তি বানিয়ে পুড়িয়েছিল দলের লোকেরাই। এ বারেও যদি সিঙ্গুরে তাঁদের পছন্দের প্রার্থী না হয়, তা হলে এ বারেও খড় পোড়ানো হবে, সে আশঙ্কা রয়েছে।’’
সিঙ্গুরের বিধায়কের এই খেদ নিয়ে বেচারামের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘প্রবীণ রবীন্দ্রনাথবাবু তাঁর কথা বলেছেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা প্রকৃত অর্থেই ঐক্য চাইছি। কোথাও কোনও বিচ্যুতি থাকলে শুধরে নেব।’’ ওই তিন পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে বোর্ড গড়তে প্রধান নির্বাচনে সমর্থন করা হয়নি বলে দাবি করেছেন সিঙ্গূরে বিজেপি নেতা সঞ্জয় পাণ্ডে।