মদন মিত্র এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মদন মিত্র। নামটা শুনলেই চোখে ভাসে হুল্লোড়ের ছবি। তিনি বঙ্গ রাজনীতির এক রঙিন চরিত্র। মদন মানেই নিত্যনতুন রঙিন পোশাক। তিনি কখনও রাস্তায় বাইক ছোটান, কখনও আবার প্রকাশ্যে চাঁচাছোলা ভাষায় চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন প্রতিপক্ষকে। আবার কখনও নায়িকাদের সঙ্গে দোল খেলেন। কথায় কথায় গলা ছেড়ে গানও করেন তিনি। তাঁর মিউজিক ভিডিও প্রকাশ পেলে ঝড়ের গতিতে ভাইরাল হয়। তাঁকে নিয়ে জোড়া বায়োপিক তৈরির প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু সেই আনন্দময় ছবির পিছনে রয়েছে এক দুখ-ভরা কাহিনিও। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের ফেসবুক লাইভে এসে সেই সব অজানা কথা শোনালেন মদন। জানালেন কী ভাবে তাঁকে অবসাদ গ্রাস করেছিল আর সেখান থেকে কোন পথে ফিরলেন পুরনো জীবনে।
এখন তিনি কামারহাটির বিধায়ক। একটা সময় রাজ্যের মন্ত্রীও থেকেছেন। আবার বেশ কিছু দিন কারাবাসও করতে হয়েছে। দীর্ঘ দিনের রাজনীতিককে থাকতে হয়েছে রাজনীতি থেক দূরে। এই ‘কাম ব্যাক’-এর পিছনে যে দুঃখের কথা রয়েছে তা নিজের থেকেই জানালেন মদন। বললেন, ‘‘আমি দিনে ১০০ থেকে ১০০০ গ্রাম পর্যন্ত ‘সেলাডোপাম’ খেয়েছি। হ্যাঁ, আমি ডিপ্রেশনের ওষুধ খেয়েছি। এক সঙ্গে ৫০ মিলিগ্রাম করে আমি ঘুমের ওষুধ খেয়েছি। আমার সেই সময়টা মাত্র কয়েক জন দেখেছে। কিন্তু সেই পরিস্থিতিতেও কারও কাছে ভিক্ষার পাত্র নিয়ে বলিনি, আমায় অন্ধকার থেকে আলোয় নিয়ে চলো।’’
এত অভিমান আর দুঃখকে সরিয়ে রাখতেই কি সব সময়ে ফূর্তির মুডে থাকেন মদন? উঠেছিল এমন প্রশ্নও। আর তার জবাবে গান গেয়ে উঠলেন, ‘দুঃখ আমাকে দুঃখি করেনি, করেছে রাজার রাজা।’ সঙ্গে জুড়লেন আর এক কাহিনি। জানালেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাশে থেকেছেন সেই কঠিন সময়েও। তিনি বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি মুহূর্তের সাপোর্ট। আজ পর্যন্ত কেউ জানে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমায় যে মন্ত্রী করতে পারছেন না, সেটা আমাকেই ফোনে জানিয়েছিলেন।’’ তাই কামারহাটিতে জিতেও মন্ত্রিত্ব না পাওয়ায় দুঃখ হয়নি তাঁর। মদনের কথায়, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই ফোনে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, মন্ত্রিসভায় তুমি হারিয়ে যাবে। কিন্তু আমার হৃদয়ে থেকে যাবে। সেই ফোনগুলোই আমায় অবসাদ থেকে বার করেছে।’’