তদন্তকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, এই সমস্ত ফাইলের তথ্য উদ্ধার করতেই বিধায়ককে হেফাজতে পাওয়াটা জরুরি। ফাইল চিত্র
নথি হাতে এসেছে। তবে বেশিরভাগই অডিয়ো ফাইলে বন্দি। জীবনকৃষ্ণ সাহার ফোন থেকে পাওয়া সেই সব নথির হদিস পেতেই বিধায়ককে হেফাজতে চাইল সিবিআই। আদালতকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানিয়েছে, বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের ফোন থেকে ১০০টিরও বেশি অডিয়ো ফাইল উদ্ধার করেছে তারা।
এ ধরনের অডিয়ো ফাইল বা অডিও ক্লিপিং ফোনের কথোপকথনের রেকর্ডিং হতে পারে। আবার কারও কণ্ঠস্বরেরও রেকর্ডিং হতে পারে। সিবিআই তা স্পষ্ট করে আদালতকে জানায়নি। তবে তদন্তকারী সংস্থাটি জানিয়েছে, এই সমস্ত ফাইলের তথ্য উদ্ধার করতেই বিধায়ককে হেফাজতে পাওয়াটা জরুরি।
মঙ্গলবার বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের মামলার শুনানি ছিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে। সেখানেই জীবনকে আবার হেফাজতে চেয়ে আদালতে আর্জি জানায় সিবিআই। তারা বলে বিধায়কের দু’টি ফোনের মধ্যে একটি থেকেই ওই ১০০টি অডিয়ো ফাইল পাওয়া গিয়েছে। ওই সমস্ত অডিয়ো ফাইলের কণ্ঠস্বর কার বা কাদের, তা জানার জন্য বিধায়কের কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করা দরকার বলে আদালতকে জানিয়েছে সিবিআই। একই সঙ্গে তারা বলেছে জীবনের হাতের লেখার নমুনাও পরীক্ষা করতে চায় তারা।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত তৃণমূলের বড়ঞার বিধায়ককে গত ১৭ এপ্রিল গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। বিধায়কের আন্দির বাড়িতে প্রায় ৬৬ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর গ্রেফতার করা হয় জীবনকে। তল্লাশি চলাকালীন নিজের দু’টি ফোন ছাদ থেকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন বিধায়ক। সেই ফোন দু’টি উদ্ধার করে নিয়ে আসে সিবিআই। মঙ্গলবার বিধায়কের হাতের লেখা এবং কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করার কথা বলে সিবিআই জানিয়েছে, ‘‘দুর্নীতির শিকড়ে পৌঁছতে চাই আমরা।’’
গত ১৭ এপ্রিল থেকে সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন জীবন। ইতিমধ্যেই একবার আদালতে পেশ করা হয়েছিল তাঁকে। মঙ্গলবার তাঁকে দ্বিতীয় বার পেশ করা হয় আদলতে। জীবনের জামিনের আবেদন করে তাঁর আইনজীবী বলেন, ‘‘উনি একজন জন প্রতিনিধি। যত দিন যাচ্ছে ওঁর সম্মানহানি হচ্ছে।’’ সিবিআই অবশ্য এই জামিনের বিরোধিতা করেছে।
সিবিআই সূত্রে এর আগে দাবি করা হয়েছিল, বড়ঞার বিধায়কের দুর্নীতির জালের অনেকটাই আন্দাজ করতে পেরেছে তাঁরা। এমনকি, সংস্থার সূত্রে খবর, তৃণমূলের এই বিধায়ক বাম জমানা থেকে শিক্ষক নিয়োগের সঙ্গে যুক্ত বলেও জানতে পেরেছে সিবিআই। মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও অবিভক্ত বর্ধমান জেলায় শিক্ষক নিয়োগের জাল বিস্তার করেছিলেন জীবন। শুধু শিক্ষক নিয়োগই নয়, বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন শংসাপত্র ছাড়াও ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতার নথিরও ব্যবস্থা তিনি করতেন বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে।