বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ফাইল চিত্র।
৪৫ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। তবু মেলেনি জামিন। আদালতে বার বার বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন বিচারক। বৃহস্পতিবার তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিধায়কের আইনজীবী। তাঁর প্রশ্ন, জীবনকৃষ্ণ জনপ্রতিনিধি এবং প্রভাবশালী বলেই কি জামিন মিলছে না?
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত জীবনকৃষ্ণ বর্তমানে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁকে আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। তাঁর আইনজীবী বিপ্লব গোস্বামী আদালতে বিধায়কের জামিনের আবেদন জানান। সেই সঙ্গে তিনি জানান, জনপ্রতিনিধি বলেই তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, জীবন জেল থেকে বেরোলে তিনি তথ্যপ্রমাণ প্রভাবিত করতে পারেন। তাতে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। কিন্তু শুধু ‘প্রভাবশালী’ বলে কি এত দিন আটকে রাখা যায়? প্রশ্ন তোলেন আইনজীবী। বিধায়কের পরিবারের কথা ভেবে মানবিকতার খাতিরে তাঁকে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন দেওয়া হোক, আবেদন জীবনের আইনজীবীর।
অন্য দিকে, জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআই আদালতে জানিয়েছে, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তদন্ত করতে গিয়ে এখনও পর্যন্ত যত জনকে তারা গ্রেফতার করেছে, তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই দুর্নীতির সঙ্গে কিছু না কিছু যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ। এঁদের কেউ টাকা নিয়েছেন, কেউ যিনি টাকা নিয়েছেন তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন, কেউ আবার যিনি নিয়োগপত্র দিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ তথ্যপ্রমাণ থেকে এই সমগ্র ষড়যন্ত্রের আন্দাজ পাওয়া যায়। রাজসাক্ষীর বয়ান থেকেও অনেক তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা। এই পর্যায়ে এসে তাই কোনও ধৃতকে ছেড়ে দিলে তদন্তে ব্যাঘাত ঘটা অনিবার্য।
গত ১৭ এপ্রিল নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে জীবনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁর বড়ঞার বাড়িতে টানা ৬৫ ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা যেতেই ২টি মোবাইল ফোন জীবন বাড়ির পাশের পুকুরে ফেলে দিয়েছিলেন। পুকুরের জল ছেঁচে সেই মোবাইলের খোঁজ চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। অবশেষে মোবাইল উদ্ধার করা হয়। তার পর জীবনকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে আসেন সিবিআইয়ের আধিকারিকেরা।