প্রতীকী ছবি
সুযোগ এসেছে গ্রামের মাটির অথবা মোরাম রাস্তা পাকা করার। অভিযোগ, সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেক গ্রামপ্রধান বা পঞ্চায়েত সদস্য নিজের বাড়ির রাস্তাটি পাকা করে নিয়েছেন। কোথাও বা আদিবাসী, তফসিলি জাতির বসবাসের এলাকা এড়িয়ে পাকা রাস্তা হয়েছে ‘বাবুদের’ পাড়ায়। এই সব সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।
আগামী বছর প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা৩ নামে নতুন প্রকল্প শুরু হবে। গ্রামের পাকা রাস্তা চওড়া করে দেড় বা দুই লেনের করা হবে সেই প্রকল্পে। তবে কোন রাস্তা চওড়া হবে, গ্রামের নেতারা তা ঠিক করতে পারবেন না। পঞ্চায়েতকর্তারা জানান, কোনও অঞ্চলের কোন এলাকায় পাঁচ হাজারের বেশি বাসিন্দা আছেন, জনগণনা রিপোর্ট থেকেই তা জানা যাবে। তার পরে জিয়ো ট্যাগিং এবং জিআইএস প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে গ্রামীণ বাজার, স্কুল-কলেজ, স্বাস্থ্য কেন্দ্র, বাসস্টপ, প্রশাসনিক ভবন চিহ্নিত করা হবে। ‘ট্রেস ম্যাপিং’ নামক পদ্ধতি নিজেই সব চেয়ে জরুরি গ্রামীণ রাস্তাগুলি বেছে নেবে। সেই অনুযায়ী তৈরি হবে নির্মাণ বা সম্প্রসারণের অগ্রাধিকার-তালিকা।
তবে এই ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা একেবারে না-থাকায় আপত্তি রয়েছে রাজ্যের। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যতই প্রযুক্তিনির্ভর ব্যবস্থা হোক, আমরা কাজ করে দেখিয়ে দেব, গ্রামে পাকা রাস্তা তৈরিতে পশ্চিমবঙ্গই সেরা। তবে গ্রামের রাস্তা কোথায় হবে, পঞ্চায়েতকর্তারা যদি সেটাও ঠিক করতে না-পারেন, তা হলে আর কিসের জন্য প্রতিনিধি!’’ প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সবিস্তার আলোচনার সময় এটি উল্লেখ করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার তৃতীয় দফায় গ্রামীণ বাজার তৈরির জন্য ‘মেজর রুরাল লিঙ্ক রোড’-এর পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছে সরকার। এই প্রকল্পে পাঁচ হাজারের বড় জনপদ, গ্রামীণ বাজার, স্কুল-হাইস্কুল, কলেজ, স্বাস্থ্য কেন্দ্র-হাসপাতাল, বাসস্ট্যান্ড, প্রশাসনিক কেন্দ্রকে চওড়া রাস্তার সঙ্গে যুক্ত করা হবে। কিন্তু প্রাথমিক তথ্যটুকু দেওয়া ছাড়া রাস্তা বাছাইয়ে কোনও ভূমিকা থাকছে না স্থানীয় নেতাদের।
এ বারেই প্রথম রাস্তা নির্বাচনের ব্যাপারে পঞ্চায়েতের পাশাপাশি স্থানীয় সাংসদেরও মত নিতে বলেছে দিল্লি।