জগদীপ ধনখড় ও ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মন্ত্রীর কঠোর সমালোচনায় রাজভবন। দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করে পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের উদ্দেশে কঠোর বার্তা দেওয়া হল রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের তরফ থেকে। পুরভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে রাজ্যপাল যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়েছিলেন মন্ত্রী ফিরহাদ। তার প্রেক্ষিতেই বুধবার বিবৃতি প্রকাশ করল রাজভবন। সংবিধান সম্পর্কে ফিরহাদের ‘প্রাথমিক জ্ঞান’ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হল সে বিবৃতিতে।
রাজভবনের বিবৃতিতে এ দিন লেখা হয়েছে যে, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের একটি মন্তব্যের বিষয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। কোন মন্তব্যটিতে রাজ্যপাল অসন্তুষ্ট, তা-ও তুলে ধরা হয়েছে বিবৃতিতে।
রাজ্যের পুরভোটে যাতে হিংসার ছবি তৈরি না হয়, নির্বাচন যাতে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হয়, তা বিভিন্ন অবকাশে জোর দিয়ে বলছেন রাজ্যপাল। সে প্রসঙ্গেই কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুরমন্ত্রী বলেন, পুরভোটে হিংসার আশঙ্কা নিয়ে রাজ্যপালের মাথা না ঘামালেও চলবে, কারণ আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। কটাক্ষের সুরে ফিরহাদ আরও বলেছিলেন যে, হিংসা নিয়ে যদি মাথা ঘামাতেই চান, তা হলে দিল্লির হিংসা নিয়ে আগে কথা বলা উচিত তাঁর।
আরও পড়ুন: করোনা-সাবধানতা: রাষ্ট্রপতি ভবনে বাতিল এ বছরের হোলি উৎসব
আরও পড়ুন: দোলের পর ভোটের দিন ঘোষণা, গোলমাল বরদাস্ত নয়, জেলাশাসকদের বার্তা কমিশনের
ফিরহাদের এই কটাক্ষের বিরুদ্ধেই বুধবার কঠোর বিবৃতি দিয়েছে রাজভবন। সংবিধান সম্পর্কে আদৌ ফিরহাদ কিছু জানেন কি না, সেই প্রশ্ন তোলা হয়েছেন রাজভবনের তরফে। বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘‘রাজ্যপালের ভূমিকা সম্পর্কে মন্ত্রী যে ভাবে কথা বলেছেন, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, সংবিধান এবং রাজ্যপালের ভূমিকার বিষয়ে প্রাথমিক জ্ঞানও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নেই।’’
রাজভবনের ব্যাখ্যা— রাজ্যপাল যে শপথ নিয়েছেন, তার সুবাদেই পশ্চিমবঙ্গে সংবিধান রক্ষা করার দায়িত্ব তাঁর। পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা নিয়েও রাজ্যপালের কথা বলার অধিকার রয়েছে বলে সেখানে লেখা হয়েছে। রাজ্যপাল যে রাজ্যের আইনসভারও অংশ, তা-ও মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে।
ফিরহাদ হাকিম যে মন্তব্য করেছেন, তাতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের (রাজ্যপালের) সম্পর্ক মসৃণ হয়ে ওঠে না বলে লেখা হয়েছে বিবৃতিটিতে।
এতেই শেষ নয়, রাজভবনের বিবৃতি এ দিন বুঝিয়ে দিয়েছে, পুরভোটের বিষয়ে রাজ্যপাল যা বলেছিলেন, সেই অবস্থানে তিনি এখনও অনড়। ২০১৩ এবং ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে ভয়াবহ হিংসা হয়েছিল, দাবি রাজভবনের। এ বারের পুরভোটে ওই হিংসার পরম্পরাকে আর চলতে দেওয়া যাবে না— এ দিন ফের লেখা হয়েছে রাজভবনের বিবৃতিতে।