প্রতীকী ছবি।
ছ’দিন আগে কেঁপেছিল পুরুলিয়া। শনিবার কাঁপল হাওড়া! আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এ দিন বিকেল ৪টে ২৯ মিনিট নাগাদ রিখটার স্কেলে ৩.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছে। তার উৎসস্থল হাওড়ায়, মাটির থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। তবে ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।
এই ভূকম্প খড়্গপুর আইআইটির ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রেও ধরা পড়েছে। ওই আইআইটি-র ভূতত্ত্ব ও ভূপদার্থবিদ্যার অধ্যাপক শঙ্করকুমার নাথ জানান, ভূকম্পের উৎসস্থল হাওড়ার উলুবেড়িয়ায়। কলকাতার মাটির সাড়ে চার কিলোমিটার তলা দিয়ে ‘ইয়োসিন হিঞ্জ’ বা ‘ময়মনসিংহ-কলকাতা হিঞ্জ’ রয়েছে। সেই হিঞ্জ লাগোয়া এলাকাতেই ভূকম্প হয়েছে।
বস্তুত, দক্ষিণবঙ্গে গত এক বছরে একাধিক ভূমিকম্প হয়েছে। গত রবিবার রাত ২টো ৫৫ মিনিট নাগাদ পুরুলিয়ায় রিখটার স্কেলে ৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। গত ২৬ মে বাঁকুড়ায় ৪.৮ মাত্রার একটি ভূকম্প হয়েছিল। গত বছরের অগস্টে হুগলির খণ্ডঘোষেও রিখটার স্কেলে ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, ‘ইয়োসিন হিঞ্জ’-এ যে পরিমাণ শক্তি সঞ্চিত হচ্ছে তা থেকে ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে। শঙ্করনাথবাবু বলেন, ‘‘এক দিক থেকে এই ছোট ছোট ভূমিকম্প ভাল। শক্তিক্ষয় হয়ে যায়।’’ মৌসম ভবনের খবর, শুক্রবার রাত ১টা ৫৯ মিনিট নাগাদ মণিপুরের চান্দেলে রিখটার স্কেলে ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। সেখানেও ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।
তবে শুক্রবার রাতেই ইন্দোনেশিয়ার জাভায় ভূমিকম্পে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দু’শোর বেশি বাড়ি। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ভূকম্পের তীব্রতা ছিল রিখটার স্কেলে ৬.৮।
এ দিনের ভূমিকম্পের পরে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের একটি স্কুলে থাকা নিমাই আদক বলেন, ‘‘সিলিং ফ্যান দুলছিল। ভয়ে তড়িঘড়ি বাইরে বেরিয়ে দেখি সামনের পুকুরে আচমকা ঢেউ উঠল।’’ খড়্গপুরের ইন্দা, সুভাষপল্লি, মালঞ্চ, খরিদা, ঝাপেটাপুর, ভবানীপুর এলাকায় অনেকেই আতঙ্কে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। পশ্চিম মেদিনীপুরের মেদিনীপুর শহর, ঘাটাল, বেলদা, দাঁতন, নারায়ণগড়, পিংলা, ডেবরাতে মাটি নড়েছে। হুগলির বিভিন্ন এলাকায় ভূকম্প অনুভূত হয়। পান্ডুয়ার বাসিন্দা অঞ্জনা বসু বলেন, ‘‘হঠাৎ শরীর কেঁপে উঠল। দেখি, পুকুরের জলও নড়ছে!’’ কলকাতা ও লাগোয়া এলাকাতেও ভূমিকম্প মালুম হয়।