ট্রেন থেকে নেমে হাঁটা শুরু, ফেরাল পুলিশ
Coronavirus

বিক্ষোভে পরিযায়ী শ্রমিকরা

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চেন্নাই থেকে মালদহ টাউন গামী একটি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন দুর্গাপুর, অণ্ডাল হয়ে সিউড়ি স্টেশনে আসে রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২০ ০৪:৪৮
Share:

সরব: সাঁইথিয়া স্টেশনে ট্রেনের গার্ডকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে কেরল থেকে ফেরার পথে পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে রামপুরহাট স্টেশন চত্বর থেকে শনিবার শ’দেড়েক পরিযায়ী শ্রমিক পালিয়েছিলেন। ঠিক একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি রবিবার ঘটতে পারত সিউড়ি ও সাঁইথিয়ার আগে বাতাসপুর স্টেশনেও। পুলিশি তৎপরতায় শেষ পর্যন্ত সেটা রুখে দেওয়া গিয়েছে। তবে রেলের বিরুদ্ধে অব্যবস্থা, অনর্থক হয়রানি করা , খাবার না দেওয়া, সঠিক জায়গায় ট্রেন না থামানোর, রুট বদল সহ একগুচ্ছ অভিযোগ ফের উঠল। অভিযোগ উঠল জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সঠিক সমন্বয় না রাখারও। হয়রানির অভিযোগে এ দিন সকালে সাঁইথিয়া স্টেশনে ট্রেনের গার্ডকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখালেন পরিযায়ী শ্রমিকেরা।

Advertisement

রেল পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চেন্নাই থেকে মালদহ টাউন গামী একটি শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন দুর্গাপুর, অণ্ডাল হয়ে সিউড়ি স্টেশনে আসে রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ। স্টেশন ছেড়ে হাটজনবাজার লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে চেন টেনে জনা সাতেক পরিযায়ী শ্রমিক ট্রেন থেকে নেমে পড়েন। রেল পুলিশ তৎপর থাকায় সকলকেই ফের ট্রেনে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু সাঁইথিয়ার আগে বাতাসপুরে ট্রেনের গতি শ্লথ হতেই ১৭জন শ্রমিক ফের ট্রেন থেকে নেমে হাঁটতে থাকেন। খবর পেয়ে সাঁইথিয়া জিআরপি ও সাঁইথিয়া থানার পুলিশের যৌথ উদ্যোগে সকলকেই মাঝপথে আটকাতে সম্ভব হয়। সকলের বাড়ি মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায়। শ্রমিকদের দাবি, কখন কোথায় ট্রেন থামবে এই অনিশ্চয়তার কথা ভেবেই ট্রেন থেকে নেমে বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছিলেন তাঁরা। প্রশাসন তাঁদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে মুর্শিদাবাদে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, গত তিন দিন ধরে প্রচুর সংখ্যক শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন আসছে। বীরভূমের বিভিন্ন স্টেশনে, বিশেষ করে রামপুরহাট ছুঁয়ে যাওয়া ট্রেনগুলির কোনগুলি থামবে, সেগুলি থেকে কত যাত্রী নামবে তার কোনও তথ্যই রেল আগাম দিচ্ছে না। ট্রেন রামপুরহাটে দাঁড়ালেই বীরভূমের বাসিন্দারা ছাড়াও মুর্শিদাবাদের বহু শ্রমিক নেমে পড়ছেন। তাঁদের ফেরাতে সমস্যা হচ্ছেই। রেল দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৮ মে গুজরাত থেকে শ্রমিক স্পেশ্যাল ওই ট্রেনটি হাজার খানেক পরিযায়ী শ্রমিক নিয়ে রওনা দেয়। ওই ট্রেনে অধিকাংশই বর্ধমান এবং হাওড়া জেলার পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। ট্রেনটি এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ নিউ জলপাইগুড়ি হয়ে সাঁইথিয়া স্টেশনে এসে পৌঁছয়। আসোনসোল হয়ে সেটির হাওড়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লাইন ক্লিয়ার না পেয়ে সাঁইথিয়া স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে ট্রেনটি।

Advertisement

শ্রমিকদের দাবি, ট্রেনটিকে ফের নিউ জলপাইগুড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা ভাবা হচ্ছিল৷ সেই কথা জানার পরই স্টেশনে গার্ডকে ঘিরে প্রায় ৪৫ মিনিট বিক্ষোভ দেখান পরিযায়ী শ্রমিকেরা। পরে সরাসরি বর্ধমান অভিমুখে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে পরিস্থিতির সামাল দেন গার্ড।

হাওড়ার বাসিন্দা পিয়ারুল শেখ, সোনাই শেখরা বলেন, ‘‘আমরা দু’মাস ধরে বাইরে রয়েছি। সঙ্গে মহিলা, শিশুরা রয়েছে। বাড়ি পৌঁছে দেব বলে চার দিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হচ্ছে। কিন্তু জল আর পাউরুটি ছাড়া কোনও খাবারের ব্যবস্থা নেই।’’ সাঁইথিয়ার স্টেশন ম্যানেজার পুলক রায় জানান, ট্রেনটির আসনসোল হয়ে হাওড়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লাইন ক্লিয়ার না থাকায় বর্ধমান অভিমুখে রওনা করিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement